বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) নিষিদ্ধ এবং চিন্ময় দাসের ফাঁসির দাবিতে সাভার-আশুলিয়ায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ছাত্র, জনতাসহ বিভিন্ন মসজিদের মুসুল্লিরা। এসময় অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার বিচার দাবি করেন তারা।
শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) জুমার নামাজ পরে সাভারের মডেল মসজিদের সামনে, হেমায়েতপুর ও আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে আশুলিয়ার ইয়ারপুর, জিরাবো, জামগড়াসহ বিভিন্ন এলাকার মসজিদ থেকে দলে দলে মুসল্লি, ছাত্র-জনতা বের হয়ে বাইপাইল এলাকায় এসে সমবেত হয়। এ সময় বিভিন্ন শ্লোগানে বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা। হাজার হাজার জনতা এ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে অংশ নেন।
অন্যদিকে সাভারের হেমায়েতপুর ও সাভার মডেল মসজিদ এলাকায় উগ্রবাদী জঙ্গী সংগঠন ইসকন কর্তৃক চট্টগ্রামে মসজিদ ভাংচুর ও আইনজীবি সাইফুল ইসলাম (আলিফ) হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে মুসুল্লীরা। পরে সাভার মডেল মসজিদের সামনে সমবেত হয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। এর আগে ইত্তেহাদুল ওলামা ও তাওহীদি জনতা তেঁতুলঝোড়া ইউনয়ন এবং আবাবিল জনকল্যান ফাউন্ডেশনের ব্যানারে মুসুল্লীরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক ও হেমায়েতপুর-সিঙ্গাইর সড়কের বিক্ষোভ মিছিল করেন।
বিক্ষোভকারীরা জানান, চট্টগ্রামে অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সবাইকে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। এসময় ‘ইসকন’কে ‘জঙ্গি সংগঠন’ দাবি করে তারা বলেন, ‘ইসকন’ একটি জঙ্গি সংগঠন। এ সংগঠনকে দ্রুত নিষিদ্ধ করতে হবে। তারা বাংলাদেশ কোনো কার্যক্রম চালাতে পারবে না। তাদের বেশির ভাগ কার্যক্রম দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের বিশ্বাসের ওপর আঘাত হেনেছে। শুধু ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত নয়, এটি দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি। আমরা এদেশে ধর্ম নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র মেনে নেব না। ‘ইসকন’কে নিষিদ্ধ করতেই হবে।
উগ্রবাদী জঙ্গী সংগঠন ইসকন কর্তৃক চট্টগ্রামে মসজিদ ভাংচুর ও আইনজীবি সাইফুল ইসলাম (আলিফ) হত্যার প্রতিবাদে এবং প্রথম আলো, ডেইলী স্টার পত্রিকা ও জঙ্গী সংগঠন ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে ইয়ারপুর ইউনিয়ন এর ওলামা ও তাওহীদি জনতা বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। এসময় তারা ইসকনের বহিস্কৃত নেতা চিন্ময় দাসের ফাঁসির দাবি জানান।
ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে বক্তারা বলেন, আমরা অসাম্প্রদায়িক জাতি হিসেবে পরিচিত। আমরা গণঅভ্যুত্থানের পরে হিন্দু ধর্মালম্বীদের মন্দির পাহারা দিয়েছি। আমরা হিন্দু ধর্ম বা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিরুদ্ধে নয়, জঙ্গি সংগঠনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছি। ‘ইসকন’ আর সনাতন ধর্মাবলম্বী এক নয়। আমরা এ উগ্রবাদী সংগঠনের সাম্প্রদায়িক সংঘাতের বিরুদ্ধে কথা বলছি। হিন্দু ভাই-বোনদেরও দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য জঙ্গি সংগঠনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহবান করছি।
ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তারা আরও বলেন, ‘ইসকন’ এর নামে তারা দেশে সাম্প্রদায়িক অশান্তি সৃষ্টি করছে। এদের কর্মকা- শুধু ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করছে না, তারা বাঙালি জাতিকে বিভক্ত করার ষড়যন্ত্র করছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।
আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে এসময় হাজার ছাত্র-জনতা ও মুসল্লি উপস্থিত ছিলেন।
ওএফ/এসআর