পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত মতে সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটক ভ্রমণের শেষ তারিখ ৩১ জানুয়ারি। ফেব্রুয়ারি থেকে দ্বীপটিতে পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। দ্বীপের বাসিন্দা ও পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ভ্রমণের সময় বাড়ানোর দাবি জানালেও এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্তের কোনো পরিবর্তন হয়নি।
দেশের সর্ব দক্ষিণের দ্বীপ সেন্টমার্টিন। কক্সবাজার থেকে সমুদ্রপথে ৬ ঘণ্টার জাহাজ যাত্রা শেষে দ্বীপটিতে পৌঁছান ভ্রমণপিপাসুরা। সাগরের স্বচ্ছ নীল জলরাশি আর দ্বীপের অপরূপ সৌন্দর্যে মুগ্ধ সবাই।
পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানান, সেন্টমার্টিন দ্বীপে প্রতি বছর ০১ অক্টোবর থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত পর্যটক যাতায়াত করে থাকেন। কিন্তু এ বছর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় থেকে পর্যটক সীমিতকরণসহ নানা বিধি-নিষেধ জারি হয়। যেখানে নভেম্বর মাসে পর্যটকরা সেন্টমার্টিন যেতে পারবেন কিন্তু রাত্রিযাপন করতে পারবে না। ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে দুই হাজার পর্যটক যেতে পারবেন ও রাত্রিযাপন করতে পারবেন আর ফেব্রুয়ারি মাসে পর্যটকরা সেন্টমার্টিন যেতে পারবেন না।
তবে যথাসময়ে জাহাজ চলাচলের অনুমতি না পাওয়ায় নভেম্বরে পর্যটকরা যেতে পারেননি সেন্টমার্টিন। আর গত বছরের পহেলা ডিসেম্বর থেকে জাহাজ চলাচলের অনুমতি হলেও ট্রাভেল পাসের মাধ্যমে সেন্টমার্টিন ভ্রমণে যাচ্ছেন পর্যটকরা।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত মতে, আগামী ৩১ জানুয়ারি শেষ হচ্ছে চলতি পর্যটন মৌসুমে সেন্টমার্টিন যাত্রা। এ কারণে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন দ্বীপের বাসিন্দারা।
দ্বীপের স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মালেক বলেন, দু’মাসের আয় দিয়ে সেন্ট মার্টিনবাসীর বাকি ১০ মাস চলা সম্ভব নয়। এ জন্য ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দ্বীপ উন্মুক্ত রাখার দাবি জানাচ্ছি।
হোটেল মোটেল রিসোর্ট মালিক সমিতির সভাপতি এম এ রহিম জিহাদী বলেন, 'অতীতে এ রকম কোনো সংকট দ্বীপে তৈরি হয়নি। এখন যদি দ্বীপে পর্যটক আসা বন্ধ হয়ে যায় তাহলে নানামুখী সংকটে পড়বেন বাসিন্দারা।'
দ্বীপে পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হাজার হাজার মানুষ। তাই মানবিক বিবেচনায় পর্যটকদের জন্য আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সেন্ট মার্টিন দ্বীপ উন্মুক্ত করার দাবি পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের।
সী ক্রুজ অপারেটর ওনার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, 'অন্তত ফেব্রুয়ারি মাসটা পর্যটকদের জন্য সেন্ট মার্টিন উন্মুক্ত রাখার অনুরোধ জানাচ্ছি। এতে দ্বীপের মানুষের এবং ব্যবসায়ীদের ক্ষতিটা অনেকাংশে পুষিয়ে নিতে পারবে।'
তবে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা ছাড়া ভ্রমণ সময় বাড়ানো সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান হোসাইন সজীব বলেন, '৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সেন্ট মার্টিনগামী জাহাজগুলো চলাচল করতে পারবে। এরপর আর পর্যটকবাহী জাহাজগুলো চলাচল করতে দেয়া হবে না। যদি সরকার সময় বর্ধিতকরণের কোনো নির্দেশনা প্রদান করে সে ক্ষেত্রে সেই নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
১৭ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের দ্বীপটিতে বসবাস করেন ১০ হাজারের বেশি মানুষ।
এফআই/এমএ