সোমবার দুপুরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাহিদ হাসান তাঁকে কারাগারে প্রেরণ করেন। তবে এদিন সুজনের আইনজীবিরা জামিনের আবেদন করেননি। এছাড়া তিনি ১৬৪ ধারায় তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে জবানবন্দি দেননি বলে জানা গেছে।
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) সকালে তাঁকে আদালতে তোলার পরে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন ইজিবাইক চালক আল আমিন গুম ও হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মানিক মিয়া। পরে আদালত তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পরে শনিবার বিকেলে সুজনকে রিমান্ডের জন্য পঞ্চগড় সদর থানায় নিয়ে আসা হয়। সোমবার দুপুর পর্যন্ত চলে রিমান্ড। সোমবার দুপুরে তাকে আদালতে হাজির করে সদর থানা পুলিশ। শুনানি শেষে পঞ্চগড়-২ আসনের সাবেক সাংসদ ও সাবেক রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনকে কারাগারে প্রেরণ করেন আদালত।
শুনানীতে সরকার পক্ষে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর ইয়াছিনুল হক দুলাল, সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আল মামুন সহ ৪-৫ জন আইনজীবি উপস্থিত ছিলেন।
আসামী পক্ষে আইনজীবি মির্জা সারোয়ার হোসেন, আলী আসমান বিপুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পঞ্চগড়-২ আসনের সাবেক সাংসদ ও সাবেক রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনের শারিরীক অবস্থা জানতে চাইলে আদালতকে তিনি বলেন, আমি সুস্থ আছি। আমার কোন সমস্যা হয়নি এবং হচ্ছে না। আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। এঘটনা সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। আমি যেই লেভেলে আছি, যেই লেভেলে আমার অবস্থান, সেই লেভেলে আমি কোন ষড়যন্ত্র করলে সেটা হতে পারে ব্যারিস্টার জমির উদ্দীন সরকার, ব্যারিস্টার নওশাদ জমিরের সাথে। কিন্তু একজন ইজিবাইক চালক তার সাথে আমার কোন বিরোধ নেই। শুধু রাজনৈতিক কারণে আমাকে এই মামলায় আনা হয়েছে। আমার সাথে এই মামলায় সাবেক পঞ্চগড়ের এত এমপি, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সহ অনেককে আসামী করা হয়েছে। আমরা সবাই ষড়যন্ত্রের শিকার। শুধু আমি না আমাদের বিরুদ্ধে এইভাবে সারা দেশে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা হচ্ছে। আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ। যেহেতু আমি এই ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত নই, আদালত যেন আমার জামিনের বিষয়টি বিবেচনা করেন।
আসামী পক্ষের আইনজীবী মির্জা সারোয়ার হোসেন বলেন, আমরা আজকে (সোমবার) আদালতে কোন জামিনের আবেদন করিনি। জামিনের আবেদন মঙ্গলবার আদালতে দেয়া হবে। সুজন সাহেব সুস্থ আছেন বলে আদালতকে জানিয়েছেন। আমরাও দেখেছি তিনি সুস্থ আছেন।
সরকার পক্ষের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর ইয়াছিনুল হক দুলাল বলেন, বিগত দিনে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হয়নি। আমরা বর্তমানে যেহেতু ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে চলছি। আসামীর রিমান্ডের আগে ও পরে স্বাস্থ্য পরীক্ষার এখন ন্যায় বিচারের উদাহারণ। পুলিশ যাতে আসামীকে কোন টর্চার করতে না পারে বা টর্চার করে, কোন ধরনের উৎকোচ গ্রহণ করতে না সে বিষয়টি ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার অন্যতম উদাহারণ। আজকে যেহেতু আসামী পক্ষ জামিনের আবেদন করেননি। সেহেতু আমরাও কোন বিরোধিতা করিনি। পরে আদালত তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করেন।
উল্লেখ্য, পঞ্চগড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে ৫ আগষ্ট দুপুর থেকে গুম হয় আল আমিন। এ ঘটনায় আল আমিনের বাবা মনু মিয়া গত ১০ নভেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক রেলমন্ত্রী সুজন সহ ১৯ জনকে আসামি করে হত্যা ও গুমের মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় আরও ১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
এসআই/এসআর