লক্ষ্মীপুরে চারদিন পর সোমবার রাতে পারভেজ আলম নামে (৩৫) এক ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার করেছে সদর মডেল থানা পুলিশ। তার পিতার নাম মৃত. খোকন মিয়া। সদর উপজেলার চররুহিতা ইউনিয়নের পূর্বচররুহিতা গ্রামের ৮নং ওয়ার্ডের একটি ধান ক্ষেত থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহতের গ্রামের বাড়ী সদর উপজেলার শাকচর ২নং ওয়ার্ডে।
পুলিশ সন্দেহজনকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দু’জনকে আটক করেছে।
স্বজনরা জানিয়েছে, ৩১ জানুয়ারী রাত প্রায় সাড়ে ১১টা থেকে তিনি পারভেজ নিখোঁজ হন। ওই দিন রাতে তার এলাকার বাগান বাড়ীতে ওয়াজ ও মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। সেইদিন মাহফিলে দই বিক্রী বাবত প্রায় দেড় থেকে দুই লাখ টাকা আমদানী হয় তার। পরে রাতভর বাড়ীতে না ফিরলে সদর মডেল থানায় জিডি রুজু করা হয় পরিবারের পক্ষ থেকে।
পরিবারের অভিযোগ, পুলিশ চেষ্টা করলে তাকে জীবিত উদ্ধার করতে পারতো। পুলিশ তা চেষ্টা করেনি।
সোমবার সন্ধ্যায় একই সদর উপজেলার পূর্ব চররুহিতা গ্রামে ৮নং ওয়ার্ডের খলিফার বাড়ী পাশে ধান ক্ষেতে এলাকাবাসী লাশটি দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। রাত প্রায় ১২টার দিকে ধান ক্ষেত থেকে লাশটি উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্য প্রেরণ করে পুলিশ। নিহতের একমাত্র তিন মাসের একটি শিশু সন্তান রয়েছে। সংসারের একমাত্র উপার্জন ব্যক্তি স্বামীকে হারিয়ে স্ত্রী বর্তমানে নির্বাক। রাতেই সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আব্দুল মোন্নাফ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এলাকাবাসী জানান, তার মতো তরুণ ব্যবসায়ী নম্র ও বিনয়ী স্বভাবের ব্যক্তি এলাকাতে বিরল। তার মৃত্যুতে এলাকায় সর্বমহলে শোকের ছায়া নেমে আসে। লাশ উদ্ধারের সময় মধ্যরাত পর্যন্ত হাজার হাজার কৌতুলী নারী পুরুষের উপস্থিতিতে এলাকার বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। এলাকাবাসী এবং নিহতের স্বজনরা এ ঘটনার সাথে জড়িতদেরকে দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেন।
অপরদিকে স্বজনরা পুলিশের অবহেলাকে তার মৃত্যুর জন্য দায়ী করেছেন। ময়না তদন্তের জন্য লাশটি জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে রাতেই পাঠানো হয়।
মঙ্গলবার বিকেল তিনটার দিকে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. অরূপ পাল জানিয়েছেন, লাশের ময়না তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। তবে রিপোর্ট দেয়ার আগ পর্যন্ত এ ব্যাপারে কিছু বলা যাবে না।
অপরদিকে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল মোন্নাফ বলেছেন, ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে দুইজনকে আটক করা হয়েছে। তাদেরকে থানায় রেখে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে আরো অপরাধীদের পাকড়াও করার অভিযান চলছে।
তিনি বলেন, পুলিশের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সত্য নয়। পারভেজ নিখোঁজ হওয়ার ব্যাপারে থানায় জিডি করার পর তার ছোট ভাই ২৪ ঘন্টায় আমাদের সাথে বা পুলিশের সাথে ছিলো। পুলিশ তাকে জীবিত উদ্ধারের যথেষ্ঠ আন্তরিকভাবে চেষ্টা করেছিলো। তবে সম্ভব হয়নি দূর্ভাগ্যক্রমে।
এমইউএম/এসআর