বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, এখন রাজনীতির নামে ধান্দাবাজি চলছে। সব জায়গায় মেরে কেটে খাওয়ার ধান্দা। রাজনীতির ধান্দায় কীভাবে ক্ষমতায় যাবে, কীভাবে থাকবে-এটাই লক্ষ্য। জামায়াতে ইসলামী এই ধান্দাকে ঘৃণা করে।
শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় নারায়ণগঞ্জের ওসমানী পৌর স্টেডিয়ামের জেলা ও মহানগর জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে আয়োজিত বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এখনো চাঁদাবাজি ও দখলবাজি চলছে। তাহলে এতগুলো প্রাণ কেন ঝরলো? এত মানুষ কেন পঙ্গু হলো? এত রক্ত কেন ঝরলো? অপকর্ম ও ধান্দাবাজি না ছাড়লে, 'উই ওয়ান্ট জাস্টিজ' বলে যারা স্লোগান দিয়েছিল, তারা আবারো মাঠে নামবে। আমরা লড়াই একসাথে চালাতে চাই। আগামীর বাংলাদেশ তরুণ প্রজন্মের হাতে তুলে দিতে চাই। ভুল করা যাবে না। স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে হবে।
তিনি আরও বলেন, তারা পালিয়ে যাওয়ার পর জনগণ স্বস্তি পেয়েছিল। কিন্তু তারা পালিয়ে গিয়েও উস্কানি দেয়। এতে যে অঘটন ঘটবে, সে দায় তাদেরই নিতে হবে।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর জামায়াতে ইসলামী আমীর মুহাম্মদ আব্দুল জব্বারের সভাপতিত্বে এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, ঢাকা অঞ্চল দক্ষিণের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল, ঢাকা মহানগর উত্তর আমীর সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মোবারক হোসাইন প্রমুখ।
ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জের মানুষ এতোদিন অনেক কষ্টে ছিল। এই নারায়ণগঞ্জকে সন্ত্রাসের রাজধানী বানিয়ে রাখা হয়েছিল। আমাদের তৎকালীন জামায়াতের আমীর ছিলেন গোলাম আযম। তার বিরুদ্ধে এই শহরের এক গডফাদার নারায়ণগঞ্জের সড়কে ৭২ ফিট লম্বা ব্যানার টানিয়েছিল। তাতে লেখা ছিল, নারায়ণগঞ্জে ওমুকের প্রবেশ নিষিদ্ধ। ডিসি, এসপির উপস্থিতিতে গডফাদার শামীম ওসমান বলেছিলেন, আমার বিরুদ্ধে খুনের অগ্রিম মামলা করে রাখেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সরকারের জুলুমের শিকার হয়ে গোলাম আযম সাহেব মারা যান। গডফাদারের সুযোগ হয়নি। আজ তিনি কোথায়? নারায়ণগঞ্জে নেই? এত অহংকার ভালো নয়। দাম্ভিকতা ভালো নয়। সন্ত্রাসকে কখনো আশ্রয় দিতে হয় না। তাহলে দুনিয়াতেই তার করুণ পরিণতি ভোগ করতে হয়। এছাড়া আখিরাতে তাকে শূলে চড়ানো হবে, যা হবে আগুনের মহাকুন্ড। তাই বলি, তওবা করুন। মানুষের মতো মানুষ হোন।
তিনি বলেন, গত ৫৪ বছর এই জাতিকে বিভক্ত করে রাখা হয়েছিল। আর সুকৌশলে এই বিভক্তি সৃষ্টি করেছে আওয়ামী লীগ। তারা বিভক্তির সূচনা করেছিলেন পাহাড়িদের নিয়ে। তারা ঘোষণা দিয়ে বলেছিলেন, 'আমরা সবাই বাঙালী।' কিন্তু এতে পাহাড়িরা প্রতিবাদ করেছিলেন। তখন থেকে এই বিভক্তি শুরু হয়েছে, যা এখনো চলমান রয়েছে। এখনো সেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়নি। তারা এখন বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে নিজেরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে। এই বিভক্তি যতদিন থাকবে, ততদিন এই জাতির মধ্যে একতা সৃষ্টি হবে না, যা দেশের মানুষ গত ৫৩ বছর ধরে প্রত্যক্ষ করেছেন।
তিনি আরও বলেন, দেশের একজন নাগরিকের সব অধিকার পাওয়ার অধিকার আছে। এটাই মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা। আমাদের এই সমাজ হবে বৈষম্যহীন। আওয়ামী লীগ দেশের সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। প্রশাসনকে, বিচার ব্যবস্থাকে আওয়ামী লীগ পুরোদমে ধ্বংস করে দিয়েছে।