রমজান মাস রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস। ইসলাম শিক্ষায় বলা হয়েছে, এই মাসে কবরের আজাব সাময়িক ভাবে বন্ধ থাকে। তবে আমাদের কর্তব্য হলো- বাবা, মা ও নিকট আত্মীয়দের কবর আজাব থেকে চিরস্থায়ী মুক্তির জন্য কাজ করা। রমজান মাস ইবাদত ও নেক আমল করার শ্রেষ্ঠ সময়, তাই এ সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ করলে আমাদের মৃত আত্মীয়রা উপকৃত হতে পারেন।
নিয়মিত দোয়া ও মাগফিরাত চাওয়া
মৃতদের জন্য দোয়া করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মহানবী (সা.) বলেছেন, "যখন একজন ব্যক্তি মারা যায়, তখন তার সব আমল বন্ধ হয়ে যায়, শুধু তিনটি জিনিস অব্যাহত থাকে, সদকায়ে জারিয়া, উপকারী জ্ঞান এবং নেক সন্তান যে তার জন্য দোয়া করে।" (মুসলিম)।
রমজানে বিশেষত ইফতারের আগে ও তাহাজ্জুদের সময় আল্লাহর কাছে বাবা-মা ও আত্মীয়দের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিত।
সদকায়ে জারিয়া (নিঃশর্তে দান) করা
রমজান হলো দান-সদকার উত্তম সময়। মৃতদের কবর আজাব থেকে মুক্তি দিতে আমরা মসজিদ-মাদ্রাসা নির্মাণে দান, কূপ খনন, অসহায়দের জন্য খাদ্য ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারি। রাসূল (সা.) বলেছেন, "শ্রেষ্ঠ দান হলো রমজানের দান।" (তিরমিজি)।
কুরআন কারীম তিলাওয়াত ও সওয়াব পৌঁছানো
রমজানে বেশি বেশি কুরআন পড়া উচিত এবং তা মৃত আত্মীয়দের রূহের শান্তির জন্য উৎসর্গ করা। বিশেষ করে, সূরা ইয়াসিন, সূরা মূলক ও সূরা ফাতিহা পাঠ করে তাদের জন্য দোয়া করলে আল্লাহ তাদের কবরের কষ্ট লাঘব করেন।
নফল ইবাদত করা
রমজানে ফরজ রোজার পাশাপাশি নফল নামাজ, জিকির, ইস্তেগফার ও তাহাজ্জুদ নামাজ পড়লে তা মৃতদের জন্য সওয়াবের কারণ হতে পারে। জীবিত আত্মীয়দের উচিত রমজানে বেশি বেশি ইবাদত করে বাবা, মা ও আত্মীয়দের জন্য দোয়া করা।
কবর জিয়ারত করা
রমজানে কবর জিয়ারত করা উত্তম আমল। রাসূল (সা.) বলেছেন, "কবর জিয়ারত করো, এটি তোমাদের আখিরাতের কথা স্মরণ করিয়ে দেবে।" (মুসলিম)।
কবর জিয়ারত করে সেখানে কুরআন তিলাওয়াত ও দোয়া করা গেলে মৃতরা উপকৃত হন।
রমজান আমাদের আত্মশুদ্ধির সময়, আর এটি মৃতদের জন্য মাগফিরাত কামনার সেরা সুযোগ। নিয়মিত দোয়া, সদকা, কুরআন তিলাওয়াত ও নেক আমল করলে আল্লাহ তাআলা আমাদের প্রিয়জনদের কবরের কষ্ট লাঘব করতে পারেন। আমাদের উচিত, শুধু রমজানেই নয়, সারা বছর এই নেক আমলগুলো চালিয়ে যাওয়া, যাতে আমাদের বাবা, মা ও আত্মীয়রা চিরস্থায়ী মুক্তি লাভ করেন।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে এই কল্যাণকর কাজগুলো করার তৌফিক দান করুন। আমিন।