‘কাদম্বিনী মরিয়া প্রমাণ করিল সে মরে নাই’ এটি শুধু নয় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিখ্যাত গল্প ‘জীবিত ও মৃত’ এর শেষ বাক্য; এর নির্যাস যায় বহুদূর– বাঙালি তথা বাংলাদেশীদের শেকড় পর্যন্ত। সমাজের পুরো শরীর জুড়ে আছে অবিশ্বাসের দুষ্ট ছাপ। একদিনে জন্ম হয়নি, বেড়েও উঠেনি একদিনে; তবে এখন সে হয়েছে অক্টোপাস, চেপে ধরেছে কণ্ঠনালী– হাঁসফাঁস অবস্থা আমাদের সম্মিলিত জীবন–রাষ্ট্র, বাংলাদেশ!
সামষ্টিক বিশ্বাসকে বলা যায় বটবৃক্ষ। সবাইকে বুকে টেনে নেয়– কাউকে ছায়া দিয়ে শীতল করে ঘর্মাক্ত প্রাণ, কাউকে দেয় আশ্রয়, নির্ভয় ঠিকানা। বিরান পাথারে অসীম সাহস নিয়ে আস্তে আস্তে বেড়ে ওঠে, ডালপালা শাখা-প্রশাখা ছড়িয়ে দাঁড়িয়ে থাকে মহীরূহ। বিশ্বাসবৃক্ষকে সযত্নে লালন করতে হয়, জল ঢালতে হয় নিয়মিত; ব্যত্যয় ঘটলেই মহাবিপদ–শিকড় সুদ্ধ মরে যায়, বিরান পাথারে কেউ জাগায় না আশার আলো; অন্ধকারে গজায় অবিশ্বাসের কুহকী শক্তি–ডালপালা নিয়ে মহাসমারোহে বেড়ে ওঠে মোহময় স্বপ্নবৃক্ষ।
আমাদের সামষ্টিক জীবনে এ-অবিশ্বাস আচার গিলে খেয়েছে সকল সুকৃতি, কৃষ্টি-কালচার। কেউ কাউকে বিশ্বাস করে না এখন; অবস্থাটা এমন মনে হয় যে, রাষ্ট্র বিশ্বাস করতে চায় না জনগোষ্ঠীকে, জনগোষ্ঠীও বিশ্বাস করে না রাষ্ট্রকে। সার্বজনীন স্বাধীন ইচ্ছার সমাবেশ হবে এদেশে –কেউ করে না বিশ্বাস। অবিশ্বাসের দুষ্ট কালো ছায়া ঘিরে ফেলেছে চারপাশ। সকল রক্তলোভী পিশাচ, ডাইনী, মহাজন গিলে খাচ্ছে আমাদের স্বাধীন রাষ্ট্র– বাংলাদেশ!
আমাদের বিশ্বাসবৃক্ষ এখন আমাদের নেই– দালাল বেনিয়া দখলে নিয়েছে সব। অবশ্য এর আগেও ছিল তাই–মাঝখানে সামান্য সময়, একটি স্বপ্ন ছিল, স্বাধীনতা সংগ্রাম ছিল, মুক্তির জন্য জনযুদ্ধ ছিল, বিজয়ও ছিল–যেন ঘুম থেকে জেগে দেখি সে নাই।
আবার খুঁজছি তাকে শৈশবে ঘাসের দঙ্গলে হারিয়ে যাওয়া মারবেলের মতো। তখন বিশ্বাস ছিল নিখাদ ভালোবাসার মতো পবিত্র–সকলই হারিয়ে সকলই পেতাম ফিরে। এখন ভয়ংকর ভালুকের চোখের মতো জ্বলছে সময় আঁধারে। অন্ধকারযুগ আগেও এসেছে, ছিলো দীর্ঘ সময় ধরে, সাথে– ‘মগের মুল্লুক’।
এখন ঘরে-বাইরে, উঠানে-আঙ্গিনায় অবিশ্বাসের ফণাতোলা সাপ হিস্ হিস্ শব্দ করছে, ছড়িয়ে দিচ্ছে বিষ বাষ্প নিশ্বাস। নির্মল বায়ু আমার দখলে নেই। বুক ভরে শ্বাস নিব বলে দানবকে ধরাশায়ী করলাম দুই হাজার চব্বিশে ছাত্রদের অদম্য সাহসী সংগ্রামের সাথে তিন প্রজন্ম এক হয়ে রক্তাক্ত গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে। স্বৈরশাসক হাসিনার নিকৃষ্টতম পতন হল– কুশীলবগণসহ পালালো। ক্ষণিক সময় মুক্ত হলাম দমবন্ধ অবস্থা থেকে; পড়ে গেলাম আবার অস্থির হাওয়ার ঘূর্ণিপাকে– হায়রে নিয়তি আমার!
এখন কী চাই আমি? কোরাসে গলা মিলিয়ে বলি– ‘রাষ্ট্র সংস্কার চাই’। মূল সুর হাওয়ায় উবে গেছে, হাড়গোড় নিয়ে টানাটানি করেছি আগেও– ‘নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থান’ পরবর্তীসময়ে এবং ‘১/১১কালে’; করছি এবারেও– কয়েকটি কমিশন, বিদগ্ধ সব পণ্ডিতজনের মোটা মোটা রিপোর্ট, দিনভর চর্বিতচর্বণ–চলছে ঐক্য বিন্দুর খোঁজে…। এ যেন চরের বালিতে হারিয়ে ফেলা নাকফুল খোঁজা। মায়ের এ নাকফুল হাজার বছরের বিশ্বাসের পরতে পরতে লেগে থাকা জন্মগন্ধে গড়া। এ-বিশ্বাস ফিরে পেলে সবই পাওয়া যাবে। এখন প্রথম প্রয়োজন বিশ্বাস বৃক্ষের খোঁজ করা। সহজে মিলবে না এটা, তা জেনেই দীর্ঘ সংগ্রামের পথে চলা আবশ্যিক করণীয় বটে। কিন্তু বীজ না বুনে, জল না ঢেলে, পরিচর্যা না করে ফসলের আশা করা–বোকার স্বর্গবাস ছাড়া কিছুই না।
আমরা বার বার ঠকে বোকা-শ্রেষ্ঠ হতে চাই না আর। এবার বুনবো ভালোবাসাবীজ– বিশ্বাসের সবুজ বৃক্ষ জন্ম নিবে, ডাল-পাতা-লতা ঝুলে-দুলে ছড়াবে সৌন্দর্য, আমাদের রাষ্ট্র। ভালোবাসি সম্মিলিত জীবন যাপন। বদ্বীপে বাস, ভাবনা বারোমাস – বিশ্বাসে ভর করে বেঁচে থাকে জীবন। সত্যি তাই, শূন্য বিশ্বাসে শূন্য অস্তিত্ব।
এতসব দার্শনিক কথায় সময় নষ্ট না করে ফিরে আসি নগ্ন জীবনে–সংগ্রামের কাব্যে। আমরা না লিখলেও ঈশ্বর রেখেছেন লিখে বাতাসের অন্তরে। কান পেতে শুনি– বিশ্বাসঘুড়ির মিহি চিকন করুণ সুর, অন্তরে অগ্নি জ্বলে দাউদাউ, তবু ভালোবাসি আরেকটি ভোর, আশার নরম আলো, ছুঁয়ে দিবে জীবনের আলপথ।
আসলে কাব্যিক কথায় জীবন চলে না। গদ্যই বাস্তব। এ গদ্যটা হ’ল– রাজনৈতিক অর্থনীতির শাসন ব্যবস্থা। এ ব্যবস্থা গড়ে ওঠেছে দীর্ঘ ঐতিহাসিক প্রক্রিয়ার চড়াই-উৎরাই এর মধ্য দিয়ে। বৃটিশ আমলের শোষণ-শাসন-শিকল থেকে মুক্তির জন্য বিদ্রোহ সংগ্রাম চলছিল পৌনে দুইশত বছর। জেল জুলুম নির্যাতন সহ্য করা, অসীম সাহসে জীবন উৎসর্গ করা হতো – ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ তথা ‘বিপ্লব দীর্ঘজীবী হউক’ স্লোগান বুকে ধারণ করে। ইংরেজদের বিদায় করে স্বরাজ প্রতিষ্ঠা করাই ছিল প্রাথমিক অগ্রাধিকার। সমাজতান্ত্রিক দর্শনে রাজনৈতিক অর্থনীতি ও শাসন প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন ছিল বিপ্লবীদের অন্তরে।
দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর ইংরেজরা চলে গেল সাতচল্লিশে, দিয়ে গেল ধর্মীয় বিভাজনের ভিত্তিতে বিষবৃক্ষসহ স্বাধীনতা। এসময় রাজনীতির কুটচালে পরিকল্পিতভাবে সৃষ্ট ভয়াবহ দাঙ্গার রক্তস্রোতে ভেসে ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ স্লোগানে আশ্রয় নিলাম কিছুটা ভালোবেসে কিছুটা অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থে বাধ্য হয়ে। কিন্তু ভূগোলের কাল্পনিক বিলাসী বিভাজন যে কতটা ভয়াবহ হতে পারে তা টের পেলাম আমরা পাকিস্তান রাষ্ট্রের শুরুতেই–’জ্বলন্ত অগ্নি থেকে পড়লাম ফুটন্ত কড়াইয়ে’। পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর শোষণ-বঞ্চনা-নিপীড়নের বিরুদ্ধে দীর্ঘ চব্বিশ বছরের সংগ্রামে প্রথমেই বাংলা ভাষার জন্য প্রাণ দিলাম। এরপর শিক্ষা আন্দোলন, সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন, তত্কালীন আওয়ামী লীগের ছয় দফা, ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের এগারো দফা আন্দোলন থেকে গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আস্তে আস্তে দানা বাঁধল স্বাধীন রাষ্ট্র –বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়। তরুণ ছাত্রছাত্রীরাই হ’ল আসল কারিগর স্থপতি হিসাবে সাথে পেলেন আওয়ামীলীগ নেতা অসীম সাহসী শেখ মুজিবকে –ভালোবেসে নাম দিল ‘বঙ্গবন্ধু’, অনেকেই শ্রদ্ধাভরে বলতেন ‘শেখ সাব’। বঙ্গবন্ধু হ’ল বাংলাদেশের জনগণের, অবশ্য পাকিস্তানী দালালগণ ছাড়া, বিশ্বাসের বটবৃক্ষ। বিদ্রোহী কবি নজরুলের কবিতা থেকে বেছে নিল ‘জয় বাংলা’ স্লোগান– সাথে যোগ করল ‘জয় বঙ্গবন্ধু’। ঐ সময়ে বিরাজমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে তরুণদের স্বপ্ন ছিল সমাজতান্ত্রিক রাজনৈতিক অর্থনীতির দর্শনে সাম্যের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা।
সংগ্রামের পথ ধরে এলো ‘উনি’শএকাত্তর’। মার্চের শুরু থেকেই শিমুল পলাশের আগুন– তরুণ-যুবক ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে একাত্ম হয়ে রাজপথে নামলো সকল শ্রেণি-পেশার সর্বস্তরের জনগণ। সবুজের মাঝে বাংলাদেশের মানচিত্র এঁকে স্বাধীন পতাকা ওড়ানো হ'ল ২রা মার্চ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানের জনসমুদ্রে দেয়া ভাষণে বঙ্গবন্ধু যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকার আহবান জানিয়ে বললেন– ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম’। এরপর এলো ২৫শে মার্চের কালরাত্রি– বর্বর পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী শুরু করল গণহত্যা। ঐ রাতের শেষ প্রহরে বঙ্গবন্ধু গ্রেফতার হওয়ার পূর্বমুহূর্তে আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতা ঘোষণা করলেন। শুরু হলো মুক্তিযুদ্ধ। ২৭শে মার্চ মেজর জিয়া বঙ্গবন্ধুর পক্ষে আবারো ঘোষণা দিলেন স্বাধীনতার। শুরু হলো স্বাধীনতার জন্য জনযুদ্ধ– নেতৃত্ব দিল আওয়ামীলীগের চার নেতা ও ভারতে আশ্রিত প্রবাসী সরকার। অপরদিকে জামায়াতে ইসলামী ও এর অঙ্গ সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘ দলীয়ভাবে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সাথে এক হয়ে এবং রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনী গঠন করে দেশজুড়ে গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন ও জ্বালাও পোড়াও শুরু করল। এক কোটিরও অধিক উদ্বাস্তু নারী পুরুষ শিশু ভারতে শরণার্থী হ'ল। যুদ্ধ চললো নয় মাস, শহীদ হ'ল তিরিশ লাখ, দুই লাখ মা-বোন ধর্ষিত হ'ল। বিশ্ব জনমত এবং ভারত ও রাশিয়ার প্রত্যক্ষ সহায়তা ও শেষদিকে ভারতের সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে ১৬ই ডিসেম্বর অর্জিত হ'ল মহান বিজয়– আমরা পেলাম স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশ। ইতিহাসের এ সংক্ষিপ্ত বয়ান সূর্যের মতো জ্বলজ্বল করা সত্য–দেশের যন্ত্রণাক্লিষ্ট গণমানুষ, পশু, পাখি, ঘাস-লতাপাতা, খাল-বিল-নদী-নালা সাগর সকলেই প্রত্যক্ষ করেছে তা।
বিজয়ের পর থেকেই শুরু হ'ল বিশ্বাস ক্ষয়ের পালা। প্রথমেই আওয়ামী লীগ বিজয়ের একক মালিকানা নিয়ে নিল, যদিও অধিকাংশ বীর মুক্তিযোদ্ধা আওয়ামীলীগ বা ছাত্রলীগের এমনকি কোন রাজনীতির সাথেও জড়িত ছিলেন না। বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে মাতৃভূমিকে পাক হানাদার বাহিনীর হাত থেকে মুক্ত করার জন্য সরাসরি যুদ্ধে গিয়েছিল যারা তাঁদের বেশির ভাগ মানুষ–ছাত্র শ্রমিক কৃষক। বঙ্গবন্ধুও পাকিস্তান কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের বৃত্তেই ঢুকে গেলেন– এমনকি মুক্তিযুদ্ধকালীন সরকারের কঠিন সময়গুলোও যথাযথ গুরুত্ব পেল না; পাকিস্তানি আমলাতন্ত্র রয়ে গেল রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার কেন্দ্রে; মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনাকারী মুজিব নগর সরকারের নেতৃবৃন্দ ও কর্মচারীগণকে ঠেলে দেয়া হ'ল পরিধিতে। মুসলিম লীগ থেকে বের হয়ে এসে যার জন্ম, বুর্জোয়া চরিত্রের পরিবর্তন খুব একটা হ'ল না আওয়ামী লীগের। যদিও সংবিধানে লেখা হ'ল চার মূলনীতি, কার্যকর করার ব্যবস্থা নেয়া হ'ল না। তরুণ ছাত্রদের সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন ধুলিঝড়ের কবলে পড়ল, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম রক্তাক্ত পথে কঠিন থেকে কঠিনতর হ'ল। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ডুবতে শুরু করল অবিশ্বাসের পঙ্কিলে। বাহাত্তর থেকে চব্বিশ পর্যন্ত সবগুলো শাসন পর্বে চলেছে গণ আকাঙ্ক্ষার সাথে চালাকি, চাতুরী, প্রতারণা, হত্যা, লুণ্ঠন, বিদেশে সম্পদ পাচার ও জিঘাংসার সংক্রমণ এবং সুসংহত হয়েছে দেশীয় আদলে ঔপনিবেশিক শোষণ প্রক্রিয়া। যে বৈষম্যের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জন্ম আজ সেই বৈষম্য-পর্বতই গিলে খাচ্ছে অস্তিত্ব। হায়রে নির্মম ট্রাজেডি!
এখানেই কি হবে শেষ? একে নিয়তি বলে মেনে নিব কি? অবশ্যই না। মুক্তির সংগ্রাম নিরন্তর মেনে চারটি মৌলিক আদর্শ–মহান মুক্তিযুদ্ধকে সর্বোচ্চ মর্যাদা প্রদান, অসাম্প্রদায়িকতা, গণতন্ত্র এবং সাম্যকে মনের গভীরে লালন করে চিন্তন প্রক্রিয়ায় গাঁথতে হবে বিশ্বাসের মালা। পুঁতিগুলো সংগ্রহ করতে হবে বাঙালির দীর্ঘ ঐতিহাসিক মুক্তির সংগ্রামের পরতে পরতে লেগে থাকা যূথবদ্ধ হওয়ার ঐক্য বিন্দুগুলো থেকে। একইসাথে অনৈক্য, শত্রুতা,হিংসা ও জিঘাংসার কলংক বিন্দুগুলো মুছে ফেলতে হবে যার যার দায় স্বীকার করে, আনুপাতিক শাস্তি ভোগ করে এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে। মনে রাখতে হবে আমাদের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান ও বর্তমান বৈশ্বিক ব্যবস্থা; মনে রাখতে হবে – কোন প্রকার মৌলবাদী আদর্শের পুঁতি থাকলে শংকর জাতি হিসেবে আমাদের বিশ্বাসের মালা গাঁথা যাবে না, জোড়াতালি দিয়ে গাঁথলেও সেটা টেকসই হবে না। বাস্তবে পাওয়া যাবে না ছাত্র-জনতার রক্তাক্ত জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্বপ্ন – নতুন বাংলাদেশ; পুরনো অক্টোপাস গিলে খাবে আমাদের – “কাদম্বিনীর” পরিণতিই করতে হবে বরণ!
কবি ও প্রাবন্ধিক
১৮ মার্চ ২০২৫
ঢাকা।