রাজশাহী মহানগরীতে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা। বড় মার্কেটের বিপণীবিতান ছাড়াও ফুটপাতের দোকানে মানুষের ভিড় বাড়ছে। যে যার মতো করে সারছেন কেনাকাটা। বড়দের গেঞ্জি, জিন্সের প্যান্ট, মেয়েদের থ্রি পিস, পায়জামা-পাঞ্জাবি, শাড়িসহ বিভিন্ন পোশাক রয়েছে ফুটপাতের দোকানগুলোতে।
মহানগরীর গণকপাড়া, সাহেববাজার, গোরহাঙ্গা রেলগেট, সিরোইল বাস স্ট্যান্ড, কোর্টবাজার, লক্ষ্মীপুরসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ১০ রমজানের পর থেকে ফুটপাতে ঈদের জমজমাট ব্যবসা চলছে। ক্রেতারা পছন্দের পোশাক কিনছেন। অনেকে পোশাক না কিনে দেখতেও আসছেন। দামাদামি করে ফিরে যেতেও দেখা গেছে অনেককে। তবে এক দামে বেশিরভাগ দোকানগুলোতে জমজমাট বেচাকেনা চলছে।
সাহেববাজারের ফুটপাত থেকে পছন্দের জামা-কাপড় কেনার সময় রহিমা খাতুন নামের এক নারী ক্রেতা জানান, তিনি মহানগরীর বুধপাড়া এলাকার বাসিন্দা। স্বামী কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। পরিবারে রয়েছে তিন ছেলে-মেয়ে। প্রতিবছর কম টাকার মধ্যে পরিবারের ঈদের কেনাকাটা করেন। বাজেটের মধ্যে যা কিনেন, তাতেই পরিবারের সবাই খুশি হন।
আরেক ক্রেতা আনিচুর রহমান জানান, তিনি স্বল্প আয়ের মানুষ। এজন্য ফুটপাত থেকে বাচ্চা মেয়ের জন্য জামা কিনেছেন। একটি কোম্পানিতে ক্লার্কের চাকরি করে চার সদস্যের ভরণপোষণ করেন। রমজান মাসে এমনিতেই সংসারের খরচ বাড়ে। এজন্য ফুটপাত থেকেই পরিবারের সব সদস্যের জন্য কেনাকাটা করবেন।
বিক্রেতারা জানিয়েছেন, এখানে যারা ঈদের কেনাকাটা করতে আসেন, তারা সকলেই স্বল্প আয়ের সাধারণ মানুষ। তাদের সামর্থ অনুযায়ী পোশাক কিনে তারা বাসায় ফিরছেন। অনেক দিনমজুর বা শ্রমিক তাদের প্রতিদিনের শ্রমের টাকাগুলো থেকে পরিবারের সদস্যদের জন্য ঈদের পোশাক নিয়ে যায়। আমাদের দোকানে ২০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০০ টাকার মধ্যে পোশাক পাওয়া যায়।
রহিম উদ্দিন নামের এক বিক্রেতা বলেন, রমজানের প্রথম দিকে ব্যবসা ভালো না হলেও ১০ রমজানের পর থেকে ফুটপাতে ঈদের কেনাকাটা জমতে শুরু করেছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে বিক্রি আরও জমজমাট হবে। ফুটপাতে যারা ঈদের কেনাকাটা করতে আসে তারা সকলেই নিম্নে আয়ের মানুষ। এজন্য তাদের দিকে খেয়াল রেখে আমরা দোকান সাজায়।
ক্রেতারা আরও বলেন, গত বছরের চেয়ে প্রায় সবধরনের পোশাকের দাম বেশি রাখছে ব্যবসায়ীরা। এতে আমাদের কিছু করার নেই। পরিবারের সবার জন্য যেটুকু কিনতে পারছি সেটা নিয়ে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে।
দাম বেশি রাখার কারণ সম্পর্কে আসিফ নামের একজন ফুটপাত ব্যবসায়ী জানান, প্রতি বছরই পোশাকেই দাম কিছুটা বাড়ে। সেই হিসাবে গত বছরের চেয়ে পাইকারিতে আমরা কিছুটা বাড়তি দামে কিনে এনেছি। ক্রয়মূল্যের সঙ্গে সিমিত লাভ রেখে আমরা পোশাক বিক্রি করি। তাই ক্রেতা পর্যায়ে দামে কিছুটা প্রভাব পড়েছে।
এফএ/এসআর