কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) সংসদীয় আসনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক দলের মধ্যে শুরু হয়েছে জল্পনা-কল্পনা এবং প্রার্থীদের নিয়ে হিসাব-নিকাশ। করিমগঞ্জ উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন এবং ১টি পৌরসভা ও তাড়াইল উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এই আসনে নির্বাচন ঘিরে প্রার্থী তালিকায় নতুন অনেকেই সামনে আসছেন।
বিগত তিন মেয়াদে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ভোটের ফল প্রশ্নবিদ্ধ ছিল, যেখানে নির্বাচিত হয়েছিলেন অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক চুন্নু। তবে ৫ আগস্ট পট পরিবর্তনের পর পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। এবার এই আসনে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা মাঠে রয়েছেন।
বর্তমানে বিএনপির অবস্থান এই আসনে শক্তিশালী এবং বিগত আন্দোলন সংগ্রামে সাংগঠনিক কার্যক্রমে সক্রিয় থাকার কারণে তারা আসনটি ফিরে পেতে মরিয়া ও আত্মবিশ্বাসী। চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ড. ওসমান ফারুক এই আসন থেকে ২০০১ সালে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন এবং চারদলীয় জোট সরকারের শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যুদ্ধাপরাধ মামলায় অভিযুক্ত হয়ে তিনি দেশান্তরী হন। তিনিও এই আসনে প্রার্থী হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে শোনা যাচ্ছে।
২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি থেকে এই আসনে চূড়ান্ত মনোনয়ন পান জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট জালাল মোহাম্মদ গাউস। বিগত ১৫ বছর ধরে আন্দোলনসহ দলীয় সকল কার্যক্রমে সক্রিয় থাকার কারণে এই আসনে মনোনয়নের দৌড়ে তিনি এগিয়ে আছেন বলে জানা গেছে। এছাড়াও এ আসনে মনোনয়ন চান জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম মোল্লা এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম ভিপি সুমন।
এদিকে, জামায়াতে ইসলামীও এই আসনে সক্রিয় হয়েছে। যদিও তারা পূর্বে এই আসনে কখনো বিজয়ী হয়নি, তবে পট পরিবর্তনের পর জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে ডা. জেহাদ খান মাঠে এসেছেন। সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের শ্যালক ও জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ডা. জেহাদ খান সম্প্রতি সাংগঠনিক সভা ও ইফতার মাহফিলে যোগ দিয়ে তাদের অবস্থান জানিয়ে দিয়েছেন। এছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি প্রভাষক আলমগীর হোসেন তালুকদারও এই নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে।
এই আসনের নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রভাবও রয়েছে, যেহেতু ১৯৮৬, ১৯৮৮, ২০০৮, ২০১৪, এবং ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগ বা মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক চুন্নু। সর্বশেষ ২০২৪ সালের 'ডামি' নির্বাচনে তিনি ষষ্ঠবার এমপি নির্বাচিত হন।
নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়ছে। কিশোরগঞ্জ-৩ আসনের ভোটাররা এবার নতুন রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রত্যাশা করছেন।
ডিএইচ/আরএন