মাদারীপুর সদর উপজেলা শ্রমিকদলের সভাপতি শাকিল মুন্সিকে (৩৮) কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় বিচারের দাবী উত্তাল হয়ে উঠছে শহর। হত্যাকারীদের বিচারের দাবীতে মরদেহ নিয়ে দুই দফায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীরা। এদিকে নিহতের ঘটনার পর এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি মাদারীপুরে পৌর শ্রমিকদলের কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে মাদারীপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান আক্তার হাওলাদারের ছোট ভাই যুবলীগ নেতা লিটন হাওলাদারকে মাদারীপুর পৌর শ্রমিকদলের সভাপতি করা হয়। লিটন হাওলাদার যুবলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত এবং চাঁদাবাজি, লুটপাট, হত্যা,সংঘর্ষসহ একাধিক মামলার আসামী হওয়ায় এই কমিটির বিরোধীতা করছিলেন শাকিল মুন্সি।
অভিযোগ রয়েছে, এই ঘটনার জের ধরেই রবিবার রাত ১০টার দিকে সদর উপজেলা শ্রমিকদলের একাংশের সভাপতি শাকিল মুন্সিকে কুপিয়ে হত্যা করেছে লিটন হাওলাদারে লোকজন। নিহত শাকিল মুন্সি মাদারীপুর সদর উপজেলার নতুন মাদারীপুর এলাকা মোফাজ্জল মুন্সির ছেলে।
নিহতের স্বজনরা জানান, রবিবার রাতে লিটন হাওলাদার, আল-আমিন হাওলাদার, জাহাঙ্গীর হাওলাদার, ওমর হাওলাদার, হাকিম বেপারীসহ বেশ কয়েকজন হামলা করে শাকিলকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানেই চিকিৎসারত অবস্থায় মারা যায় শাকিল।
এদিকে মারা যাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে বিএনপির সমর্থকরা হত্যাকারীদের বিচার দাবী করে শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে। হামলাকারীদের ৪টি ঘর পুড়িয়ে দেয়। এদিকে সোমবার বিকালে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে শাকিলের মরদেহ ময়নাতন্ত সম্পন্ন হয়। পরে শাকিলের মরদেহ নিয়ে হত্যাকারীদের বিচারের দাবীতে দ্বিতীয় দফায় বিক্ষোভ মিছিল করে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। ঘটনায় পরে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
মাদারীপুর জেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব কামরুল হাসান বলেন, মাদারীপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান আক্তার হাওলাদার। তার এক ভাই ওরম জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি। অপর ভাই লিটন যুবলীগ নেতা। তারাই শাকিলকে হত্যা করেছে। আমরা এর বিচার চাই।
জেলা শ্রমিকদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো.হেমায়েত হোসেন বলেন, শাকিলকে আওয়ামী লীগের দোসররা খুন করেছে। এই হত্যার সাথে লিটন হাওলাদার, আনোয়ার হাওলাদার, আলাউদ্দিন নপ্তী, আকমল হোসেন খান জড়িত।
নিহত শাকিলের ভাই মাদারীপুর পৌর বিএনপির ২নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক হাসান মুন্সি বলেন, আমার ভাই শাকিলকে প্রতিপক্ষ লিটন, আল আমিন, জাহাঙ্গীরসহ বেশ কয়েকজন কুপিয়ে হত্যা করেছে। এরা সবাই আওয়ামী লীগের লোকজন। আমি এই হত্যার বিচার চাই।
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মো.সাইফুজ্জামান বলেন, শাকিল মুন্সি নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করেছে। এই ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা থাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। দোষীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
এএইচএস/এসআর