বদলি করার পরও দপ্তর ছাড়ছিলেন না বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) নির্বাহী পরিচালক (ইডি) শফিকুল ইসলাম। এ জন্য সংস্থাটির কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী তাঁকে জোর করে দপ্তর ছাড়তে বাধ্য করেছেন।
গত রোববার দুপুরে রাজশাহীতে বিএমডিএর প্রধান কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
শফিকুল ইসলাম সরকারের অতিরিক্ত সচিব। গত বছরের জুলাইয়ে তাঁকে বিএমডিএর ইডি হিসেবে পদায়ন করা হয়। পরে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রেষণ-১ শাখার প্রজ্ঞাপনে তাঁকে রাজশাহীতে অবস্থিত বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক হিসেবে পদায়ন করা হয়। তবে সেখানে না গিয়ে এক মাস ধরে বিএমডিএতেই অফিস করছেন তিনি।
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিযোগ, বিগত সরকারের সময় আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাদের সুপারিশে শফিকুল বিএমডিএর ইডি হয়েছিলেন। তিনি এখনো আওয়ামীপন্থী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নানা সুবিধা দিয়ে যাচ্ছেন। বদলির আদেশের পরও তিনি নাজিরুল ইসলাম নামের একজন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীকে বিএমডিএর রাজশাহী জোনের প্রধান করে পদায়ন করেন। এ নিয়ে বিএনপিপন্থী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দেয়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, গত রোববার দুপুরে ইডি শফিকুল তাঁর কার্যালয়ে ছিলেন। তখন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও সেচ শাখার প্রধান জাহাঙ্গীর আলম খানসহ কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী তাঁর দপ্তরে যান। তাঁরা রোববারের মধ্যেই দপ্তর ছেড়ে তাঁকে রেশম বোর্ডে গিয়ে যোগ দিতে বলেন। এ সময় উভয়ের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। দু-একজন শফিকুলকে চেয়ার থেকে তোলার জন্যও এগিয়ে যান। তখন তিনি দায়িত্ব ছাড়তে রাজি হন। পরে তিনি জাহাঙ্গীর আলম খানের কাছে দায়িত্ব ন্যস্ত করেন। পরে শফিকুল বেরিয়ে গেলে তাঁর চেয়ারে বসেন জাহাঙ্গীর। আরও দুজন জ্যেষ্ঠ তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীকে টপকে তিনি এই চেয়ারে বসে পড়েন।
সোমবার দুপুরে ইডির দপ্তরে গিয়ে জাহাঙ্গীর আলম খানকে চেয়ারে পাওয়া যায়। তিনি বলেন, ‘আমি দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। তবে অফিস আদেশ জারি হয়নি। এটা হয়ে যাবে।’
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য শফিকুল ইসলামের মোবাইল ফোনে কয়েকবার কল করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে তাঁর ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
ঘটনার সময় বিএমডিএর চেয়ারম্যান ড. এম আসাদুজ্জামান তাঁর দপ্তরে ছিলেন না। তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী তরিকুল ইসলাম বলেন, বদলির আদেশের পরও এক মাস ধরে দাপ্তরিক কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন শফিকুল। বদলির আদেশের পরও তিনি জোনপ্রধান করার মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ ফাইলে সই করেন। এতে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। পরে শফিকুলকে দপ্তর ছাড়তে অনুরোধ করলে তিনি কথা রাখেন।
অফিস আদেশের আগেই জাহাঙ্গীর আলম খান ইডির চেয়ার দখল করলেন কি না- এমন প্রশ্নে তরিকুল ইসলাম বলেন, এটা দখল না। কাউকে না কাউকে তো দায়িত্ব নিতে হবে। তিনি বিএমডিএর নিজস্ব কর্মকর্তা। এ পদে বাইরের কর্মকর্তা না থেকে নিজেদের কর্মকর্তা থাকলে কাজ ভালো হয়।
আরএইচএফ/এসআর