সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার পূর্ব পাগলা ইউনিয়নে পূর্ব বিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার দুপুর ২টার দিকে পূর্ব পাগলা ইউনিয়নের পিঠাপশী ও ঘোড়াডুম্বুর গ্রামবাসীর মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন লোক আহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৪ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতদেরকে চিকিৎসার জন্য স্থানীয় কৈতক হাসপাতাল, সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল এবং সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পিঠাপশী গ্রামের পক্ষের আহতরা হলেন- মৃত আরজক আলীর ছেলে আয়েছ মিয়া, নোয়াব আলীর ছেলে মিজানুর রহমান ছুরুক, আমরাজ মিয়া, কদরিছ আলরি ছেলে জুনেদ আহমদ।
ঘোড়াডুম্বুর গ্রামের পক্ষের আহতরা হলেন- ফজর আলীর ছেলে ফয়সল আহমদ, মৃত নিয়ামত আলীর ছেলে ছুরত মিয়া, মৃত হিরন মিয়ার ছেলে ফখরুল ইসলাম, রফিক উদ্দিনের ছেলে সাইকুল ইসলাম, নাহার মামুনের ছেলে খোয়াজ আলী, গয়াছ মিয়ার ছেলে মনসুর উদ্দিন। তাৎক্ষণিকভাবে অন্যান্য আহতদের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি, কারণ তাদেরকে বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টায় ঘোড়াডুম্বুর গ্রামের হিরন মিয়ার ছেলে লেগুনা চালক ফখরুল ইসলামের ১৫ মাসের এক শিশু সন্তান গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের কাছে নিতে নিজ লেগুনায় রাতেই বের হন ফখরুল। সাথে ছিলেন চালক ফখরুলের মা, স্ত্রী ও এক ভাই। দ্রুত লেগুনা চালিয়ে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন ফখরুল। শিশুর অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় গাড়িতে কান্নাকাটি করছিলেন শিশুর মা ও দাদী। রাস্তা দিয়ে গাড়ি চলার সময় ঘোড়াডুম্বুর গ্রামের লোকজন গাড়ির ভিতর থেকে কান্নার আওয়াজ শুনে ভেবে নেন কোনো চক্রের লোকজন কোনো এক মহিলাকে অপহরণ করে নিয়ে যাচ্ছেন। তখন তারা সামনের গ্রাম পিঠাপশীর লোকজনকে ফোন করে জানায়, গাড়িটি আটকিয়ে ঘটনা কী তা বোঝার চেষ্টা করতে। এই খবর পেয়ে পিঠাপশী গ্রামের এমরাজ মিয়া, ছালিক মিয়া ও শামীম মিয়াসহ কয়েকজন ফখরুলের দ্রুত গতির গাড়িকে থামানোর ‘সিগন্যাল’ দেন। কিন্তু ফখরুল গাড়ি না থামানোয় এবং গাড়ির ভিতর থেকে মহিলার কান্নার আওয়াজ শুনতে পাওয়ায় তাদের সন্দেহ আরও বেড়ে যায়। পরে মোটরসাইকেল দিয়ে তাড়া করে এবং সামনের গ্রাম খারাইয়ের মানুষের সহায়তায় খারাই পয়েন্টে লেগুনাকে আটকানো হয়। এসময় গাড়ি থেকে নেমে উপস্থিত লোকদেরকে বিষয়টি বুঝিয়ে না বলেই কিছু রাগারাগি করেন চালক ফখরুল। তখনই একটি হট্টগোল বেঁধে যায় এবং চালক ফখরুল ইসলামকে আটকে রাখে উপস্থিত লোকজন। পরে বিষয়টি বুঝতে পেরে শিশুটিকে চিকিৎসার জন্য পাঠান খারাই ও পিঠাপশী গ্রামবাসী। এই ঘটনার জেরে সোমবার দুপুরে পিঠাপশী গ্রামের হেলাল আহমদ (২০) ঘোড়াডুম্বুর গ্রামে গেলে তাকে আটকে রাখে ওই গ্রামের লোকজন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে পিঠাপশী গ্রামে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। দুপুর ২টায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে উভয় পক্ষ।
ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে ছিলো এবং পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে শান্তিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আকরাম আলী বলেন, আমাদের ফোর্স ঘটনাস্থলে রয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত। মামলা হলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসএইচ/আরএন