Sunday | 27 April 2025 | Reg No- 06
Epaper | English
   
English | Sunday | 27 April 2025 | Epaper
BREAKING: বিদ্যুৎ-মেট্রোরেলসহ যেকোনো ধরনের সেবা বিঘ্নিত হলে টেলিভিশনে স্ক্রল দিতে হবে      গরমে লোডশেডিং সহনীয় পর্যায়ে থাকবে: জ্বালানি উপদেষ্টা      মাঠে ফেরার সময় জানালেন তামিম      পিকআপ-অটোরিকশার সংঘর্ষে নিহত ৫      রোমে বাংলাদেশ হাউস পরিদর্শন করলেন প্রধান উপদেষ্টা      ইসরায়েলের হামলায় গাজায় নিহত আরও ৮৪      কুয়েটের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যকে অব্যাহতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন      

মির্জাগঞ্জে ৭ শিক্ষার্থীর বিপরীতে শিক্ষক ৬ জন

Published : Friday, 11 April, 2025 at 5:40 PM  Count : 418

পটুয়াখালীমির্জাগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ পশ্চিম কলাগাছিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী আছে মাত্র ৭ জন। আর এ ৭ শিক্ষার্থীকে পাঠদানের জন্য ওই প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত রয়েছেন ৬ জন শিক্ষক। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৯২ সালে উপজেলার মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নের কলাগাছিয়া গ্রামের স্থানীয়দের দান করা জমির উপর বিদ্যালয়টি গড়ে ওঠে। ২০১৩ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করন হয় এবং ২০২২ সালে ১ কোটি ২০ লক্ষ ২৪ হাজার ৪৯৬ টাকা ব্যয়ে বিদ্যালয়ের জন্য চার কক্ষের একটি একতলা ভবন নির্মিত হয়। 

সরেজমিন দেখা গেছে, বিদ্যালয়ে পাঁচ শিক্ষক উপস্থিত আছেন। সঙ্গে উপস্থিত সাত শিক্ষার্থী। তারা সবাই একই কক্ষে দ্বিতীয় শ্রেণিতে একত্রে তিনজন শিক্ষিকার সাথে বসে আছে এবং প্রধান শিক্ষক ও একজন সহকারী শিক্ষিকা লাইব্রেরীতে আছেন। খাতা-কলমে ৫৭ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ১৮ জন উপবৃত্তির সুবিধা পাচ্ছে। উপবৃত্তি প্রাপ্ত ১৮ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৬ জন পাশ্ববর্তী মাদ্রাসার ছাত্র। 

স্থানীয় আব্দুল সালাম সিকদার বলেন, বিদ্যালয়ের উন্নয়নের টাকা ও খাতায় ভুয়া শিক্ষার্থী দেখিয়ে উপবৃত্তির টাকা আত্মসাৎ করে তারা। স্কুলে শিক্ষার্থী বৃদ্ধিতে তাদের কোন উদ্যোগই নাই। এমনকি ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সন্তানদেরও অন্য বিদ্যালয়ে পড়া-লেখা করাচ্ছে। স্কুলের পাশের দুই জন শিক্ষকের বাড়ি হওয়ায় তারা যে কোন সময় বাড়িতে চলে যায়। 

স্থানীয় রবিউল ফকির বলেন, এখানে ছাত্রছাত্রী নাই বললেই চলে। আমার ভাই ওই স্কুলের ছাত্র ছিল তাকে কিছুদিন পূর্বে অন্য বিদ্যালয়ে নিয়ে গেছি এবং আমার চাচাতো ভাইকে দুই একদিনের মধ্য নিয়ে যাব। এখানের হেড স্যার স্কুল ঠিকমতো পরিচালনা করতে পারে না। সোজা কথা লেখাপড়া নাই বললেই চলে। 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরও কয়েকজন বলেন, বিদ্যালয় একেবারে গোল্লায় গেছে। এখানে কোনো লেখাপড়া হয় না। শিক্ষকেরা একজন অন্যজনের চুল দেখাদেখি নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। কোনো সময় ছাত্র-ছাত্রী বৃদ্ধির জন্য শিক্ষকেরা বাড়ি বাড়ি অভিভাবকের কাছে যান না।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সদস্য ও জমিদাতার পুত্রবধূ শাহিনা বেগম বলেন, শিক্ষকদের গাফিলতির কারণে দিন দিন শিক্ষার্থী কমছে। আমার ছেলেকে ওই স্কুলে দিয়ে ভুল করেছিলাম। এখন মেয়েকে বাড়ির সামনের স্কুল রেখে কষ্ট হলেও দূরের অন্য বিদ্যালয় দিয়েছি ওদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে। বিভিন্ন সময় দেখা যায় শিক্ষকরা ছাত্রছাত্রীর লেখাপড়া বাদ দিয়ে তারা ২-৩ জন একই ক্লাসে বসে গল্পে ব্যস্ত থাকেন।

সহকারী শিক্ষিকা মুকুল খানমের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি সত্যতা স্বীকার করে বলেন, শিক্ষকরা স্কুলে এসে চেয়ারে বসে ঘুমায় এবং দুই জন শিক্ষকের বাড়ি প্রতিষ্ঠানের পাশে হওয়ায় তারা স্কুল চলাকালীন সময় যখন তখন বাড়িতে যায়। এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক কোন ব্যবস্থা নেয় না। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানে প্রাক প্রাথমিকে জানুয়ারী থেকে কোন শিক্ষার্থী আসে না।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেনের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, আমার প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষিকা মুকুল খানম সব কিছুই বলছে। আমার কিছু বলার নাই।

মাধবখালী ইউনিয়নের দায়িত্বরত সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা জাহিদ উদ্দিন বলেন, 'আমি সরেজমিন ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে দক্ষিণ পশ্চিম কলাগাছিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তদন্তে গিয়ে দ্বিতীয় শিফটে ২০ জন শিক্ষার্থী ও পাঁচজন শিক্ষক পেয়েছি। আমার ধারণা বর্তমানে শিক্ষকদের গ্রুপিংয়ের কারণে এবং শিক্ষকদের আন্তরিকতার অভাবে প্রতিষ্ঠানটির এ অবস্থা। এ কারণে এখানে শিক্ষার্থীরা আসতে চায় না।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ‘দক্ষিণ কলাগাছিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংখ্যা কম জানতে পেরে আমি তাৎক্ষনিক তদন্তে গেছিলাম তখন ১২ জন ছাত্র-ছাত্রী পেয়েছি। শিক্ষকদের দক্ষতার ঘাটতি আছে, আমি তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করতেছি। তাদের শিক্ষার্থী বৃদ্ধির জন্য তিন মাসের সময় দিয়েছি। যদি শিক্ষার্থী বৃদ্ধি না পায় তাহলে আমি বিদ্যালয়টির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রাথমিক অধিদপ্তরে লিখিতভাবে জানাবো।’

এসআর
Related topic   Subject:  পটুয়াখালী   মির্জাগঞ্জ  


LATEST NEWS
MOST READ
Also read
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000.
Phone: PABX- 41053001-06; Online: 41053014; Advertisement: 41053012.
E-mail: [email protected], news©dailyobserverbd.com, advertisement©dailyobserverbd.com, For Online Edition: mailobserverbd©gmail.com
🔝
close