ছয় দফা দাবিতে রাজশাহীতে রেলগেট এলাকায় দুই ঘণ্টাব্যাপী অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে কারিগরি শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ২টা পর্যন্ত রাজশাহী মহানগরীর ব্যস্ততম রেলগেট এলাকাটি অবরোধ করে রাখেন তারা। রাজশাহী পলিটেকনিক, রাজশাহী মহিলা পলিটেকনিক্যাল এবং সার্ভে ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা এই কর্মসূচিতে অংশ নেন।
আন্দোলনের ফলে আশপাশের সড়কগুলো বন্ধ হয়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয় এবং সাধারণ মানুষ দুর্ভোগে পড়েন।
আন্দোলনকারীরা যে ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেছেন, তা হলো:
১। জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের অবৈধ পদোন্নতির রায় হাইকোর্ট কর্তৃক বাতিল করতে হবে। পাশাপাশি, ‘ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টর’ পদবি পরিবর্তন এবং মামলার সঙ্গে জড়িতদের স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করতে হবে। ২০২১ সালে নিয়োগপ্রাপ্ত রাতারাতি নিয়োগের ওই ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের নিয়োগ বাতিল এবং সংশ্লিষ্ট বিতর্কিত নিয়োগবিধি অবিলম্বে সংশোধন করতে হবে।
২। ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে যেকোনো বয়সে ভর্তির সুযোগ বাতিল করতে হবে। উন্নত বিশ্বের আদলে চার বছর মেয়াদি মানসম্পন্ন কারিকুলাম চালু করে একাডেমিক কার্যক্রম ধাপে ধাপে সম্পূর্ণ ইংরেজি মাধ্যমে পরিচালনার ব্যবস্থা নিতে হবে।
৩। উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও সমমানের (১০ম গ্রেড) পদে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং ও মনোটেকনোলজি (সার্ভেয়িং) থেকে পাসকৃত শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকা সত্ত্বেও অনেক প্রতিষ্ঠানে তাদের নিম্নপদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে— এর বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।
৪। কারিগরি সেক্টর পরিচালনায় পরিচালক, সহকারী পরিচালক, বোর্ড চেয়ারম্যান, উপসচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও অধ্যক্ষসহ সকল গুরুত্বপূর্ণ পদে কারিগরি শিক্ষা বহির্ভূত জনবল নিয়োগ নিষিদ্ধ করতে হবে। এসব পদে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ এবং সকল শূন্য পদে দক্ষ শিক্ষক ও ল্যাব সহকারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দ্রুত প্রকাশ করতে হবে।
৫। কারিগরি শিক্ষায় বৈষম্য ও দুরবস্থা দূর করে দক্ষ জনসম্পদ তৈরিতে ‘কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়’ নামে স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় গঠন করতে হবে। পাশাপাশি, দ্রুত সময়ের মধ্যে ‘কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন’ গঠন করতে হবে।
৬। পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পাসকৃত শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করতে একটি উন্নতমানের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এ ছাড়া, নড়াইল, নাটোর, খাগড়াছড়ি ও ঠাকুরগাঁওয়ে নির্মাণাধীন চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক থেকে পাসকৃত শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী ক্যাম্পাস এবং ডুয়েটের আওতাভুক্ত একাডেমিক কার্যক্রমের মাধ্যমে আগামী সেশন থেকে শতভাগ সিটে ভর্তি নিশ্চিত করতে হবে।
শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাক আহমেদ বলেন, শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণভাবে সড়ক থেকে সরিয়ে দিয়েছে পুলিশ ও সেনাবাহিনী। পরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে আসে।
এফএ/আরএন