সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার ডিবিতে থাকা নথি আংশিক আগুনে পুড়ে গেছে বলে যে তথ্য জানানো হয়েছে তা সঠিক নয়। মঙ্গলবার দুপুরে গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আরসাদুর রউফ।
এর আগে এ হত্যা মামলার ডিবিতে থাকা নথি আংশিক আগুনে পুড়ে গেছে বলে হাইকোর্টকে জানায় রাষ্ট্রপক্ষ।
এর কিছুক্ষণ পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আরসাদুর রউফ। তিনি বলেন, কোনো নথি পুড়ে গেছে এ ধরনের নিউজ সঠিক নয়।
এদিকে, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রচারিত সাগর-রুনি হত্যা মামলার নথিপত্র ডিবি হেফাজতে পুড়ে যাওয়ার তথ্যটি সঠিক নয় বলে এক বিশেষ বিবৃতিতে জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
ডিএমপির মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন্স-এর উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।
এদিকে, সাগর-রুনি হত্যা মামলা তদন্তের জন্য রাষ্ট্রপক্ষ আরও ৯ মাস সময় চাইলে আদালত ৬ মাস দিয়েছেন। মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে মামলায় বাদিপক্ষের শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী শিশির মনির। আর রিটকারীর পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকার পশ্চিম রাজাবাজারে সাংবাদিক দম্পতি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার এবং এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি তাদের ভাড়া বাসায় নির্মম ভাবে খুন হন। পর দিন ভোরে তাদের ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
ওই বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি রুনির ভাই নওশের আলী রোমান বাদি হয়ে শের-ই-বাংলা নগর থানায় হত্যা মামলা করেন। প্রথমে মামলার তদন্ত করেন শের-ই-বাংলা নগর থানার এক কর্মকর্তা। একই সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্তভার পড়ে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উত্তরের পুলিশ পরিদর্শক মো. রবিউল আলমের ওপর।
দুই মাস পর হাইকোর্টের আদেশে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় র্যাবকে। সেই থেকে আজ পর্যন্ত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি সংস্থাটি।
এদিকে, এ মামলার বাদি পক্ষে আইনি লড়াইয়ের জন্য ২৯ সেপ্টেম্বর আইনজীবী শিশির মনিরকে নিযুক্ত করা হয়।
২০১২ সালে হত্যাকাণ্ডের পর তদন্ত ও আসামি গ্রেপ্তার নিয়ে জনস্বার্থে রিট করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ। সেই রিটের শুনানি নিয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। ওই বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি জারি করা রুলে সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের খুনিদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জানান, সাগর-রুনি মামলার তদন্ত সঠিক ভাবে করা এবং আসামিদের আইনের আওতায় আনার জন্য ২০১২ সালে আমরা একটা রিট দায়ের করেছিলাম। সেই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত রুল জারি করেছিলেন। রুলে সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত করে আসামিদের আইনের আওতায় আনার জন্য কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন। এরপর আমাদের পৃথক একটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলার তদন্ত র্যাবের কাছে চলে যায়। সেই থেকে আজ পর্যন্ত এ মামলার চূড়ান্ত কোনো অগ্রগতি হয়নি।