হাওরাঞ্চল সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার সবখানেই এখন ধান কাটা, মাড়াই আর শুকানোর ধুম। নাওয়া-খাওয়া ভুলে এখন চলছে ধান ঘরে তোলার তোড়জোড়৷ শঙ্কা কাটিয়ে ইতিমধ্যে হাওরের ৭৫ ভাগ ধান কাটা শেষ হয়েছে। আর কয়েকদিনের মধ্যে শতভাগ ধান কাটা শেষ হবে। এখন চলছে পুরোদমে ধান মাড়াইয়ের কাজ। এই মুহুর্তে কৃষাণ-কৃষাণীরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন ধান গোলায় তোলার কাজে। তাদের সহায়তা করছেন কৃষক পরিবারের অন্য লোকজন।
সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন হাওরে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার হাওরে হাওরে ধান কাটা, প্রতিটি খলা, বাসা-বাড়ির উঠান, ছাদ এবং সড়কে ধান শুকানোর কাজ চলছে বিরামহীনভাবে। কেউ কেউ আবার হোড়া তৈরি করেছেন ধান পাহারা দেয়ার জন্য। ধান ঘরে তুলতে পেরে খুশি প্রতিটি কৃষক পরিবার৷ আর ক'দিন গেলেই পুরোপুরি ধান কেটে গোলায় তুলার আশা কৃষকদের।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এবছর শান্তিগঞ্জের বিভিন্ন হাওরে ২২ হাজার ৬১২ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এরমধ্যে হাওরে ১৮ হাজার ৩৯৭ হেক্টর ও নন-হাওরে ৪ হাজার ২১৫ হেক্টর৷ এ বছর ধান উৎপন্ন হবে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৫৮৩ মেট্রিকটন এবং চাল ৯৪ হাজার ৭৬৫ মেট্রিক টন। যার বাজার মূল্য প্রায় ৪৩০ কোটি টাকার উর্ধে। ইতিমধ্যে ৭৫ শতাংশ ধান কাটা শেষ হয়েছে বলেও জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর৷
কথা হলে দেখার হাওরের কৃষক নিজাম উদ্দিন বলেন, প্রথমদিকে অতিবৃষ্টির আশঙ্কার খবর শুনে ভয় পেয়েছিলাম৷ এরপর দ্রুত পাকা ধান কেটে খলায় এনেছি। এখন ধান শুকিয়ে গোলায় তুলার ব্যবস্থা করছি। ফলন ভালো হওয়ায় লাভবান হবো।
সাংহাই হাওরের কৃষক সুজন মিয়া, বেলায়েত হোসেন ও কামরুজ্জামান জানান, তারা প্রত্যেকেই ১০ কেদার করে জমি চাষ করেছিলেন। কিছু জমিতে কাটা-মাড়াই কাজ শেষের দিকে। সেই ধান ঘরে তোলার অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন তারা। এ বছর বোরো ধানের বাম্পার ফলন ও দাম ভাল থাকায় তারা বেজায় খুশি।
এ ব্যাপারে শান্তিগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আহসান হাবিব বলেন, হাওরে এই মুহুর্তে ৮৭ টি কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন ধান কাটছে। ইতোমধ্যে শান্তিগঞ্জ উপজেলায় ৭৫ শতাংশ ধান কাটা শেষ। সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই শতভাগ ধান কাটা শেষ করতে পারবেন কৃষকরা৷ ভালো ফলন হওয়ায় তারা লাভবান হবেন৷ হাওরে হাওরে আমাদের টিম সার্বক্ষনিক কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে পাশে আছেন৷ আমরা আশা করছি এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি ধান উৎপাদন হবে।
এসআর