Tuesday | 20 May 2025 | Reg No- 06
Epaper | English
   
English | Tuesday | 20 May 2025 | Epaper
BREAKING: তারেক রহমান তরুণদের ভাবনা ধারণ করতে চান: মইনুল হাসান      হাসিনার দোসরদের সাথে নিয়ে কুচক্র পরিকল্পনা চলছে: ইশরাক      দেশ ও কর্মীদের স্বার্থে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খোলা জরুরী      ‘লুটের টাকা ব্যবস্থাপনা তহবিল’ গঠন করবে সরকার      এভারেস্ট জয় করে শাকিলের রেকর্ড      ভারতের কাছে হেরে গেল বাংলাদেশ      হত্যাচেষ্টার মামলায় গ্রেপ্তার নুসরাত ফারিয়া      

মৌলভীবাজারে সৌন্দর্য ও সুরভি ছড়াচ্ছে ‘নাগলিঙ্গম ফুল’

Published : Wednesday, 30 April, 2025 at 8:46 PM  Count : 129

লম্বা গাছে থোকায় থোকায় ফুটে আছে নয়নাভিরাম নাগলিঙ্গম ফুল। প্রকৃতির একটি দুর্লভ বৃক্ষ হচ্ছে নাগলিঙ্গম। এ ফুলের গন্ধ, বর্ণ ও বিন্যাসে যে কেউ মুগ্ধ হয়। শাখা-প্রশাখায় নয়, এ বৃক্ষের ফুল ও ফল হয় কাণ্ডে। এর মধ্যে মৌলভীবাজার জেলায় ২টি নাগলিঙ্গম গাছে ফুল আসার তথ্য পাওয়া গেছে। বর্তমানে ফুলে ও ফলে ভরে গেছে গাছের কাণ্ড। জেলার শ্রীমঙ্গলস্থ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিটিআরআই) ও মির্জাপুর ইউনিয়নের শহরশ্রী গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত নৌ কর্মকর্তা দেওয়ান গউছউদ্দিন আহমদের বাড়িতে। এসব বৃক্ষগুলো দেখতে আসা পর্যটকরা ক্যামেরাবন্দি হচ্ছেন গাছের সাথে।

জানা যায়, নাগলিঙ্গমের বৈজ্ঞানিক নাম ‘কুরুপিটা গুইয়ানেন্সিস’। প্রায় তিন হাজার বছর আগে আমাজান জঙ্গলে প্রথমে এই গাছের সন্ধান মেলে। গাছগুলো ‘ক্যানন বল’ (কামানের গোলা) নামেও পরিচিতি। ভারতে নাগলিঙ্গমকে ‘শিব কামান’ নামে ডাকা হয়। নাগলিঙ্গম ফুল সারা বছর ফুটলেও গ্রীষ্মকাল হচ্ছে উপযুক্ত সময়। শীত এবং শরৎকালে গাছে অপেক্ষাকৃত কম ফুল ফোটে। নাগলিঙ্গম গাছের ফুলটি গাঢ় গোলাপি, সঙ্গে হালকা হলুদ রঙের মিশ্রণ। ফুলের সৌরভে রয়েছে গোলাপ আর পদ্মের সংমিশ্রণ। অদ্ভুত সুন্দর ফুলটির পরাগচক্র অনেকটা সাপের ফণার মতো। বৃক্ষটির ফুল দেখতে বেশ আকর্ষণীয় হওয়ায় ফুলের মনকাড়া সৌন্দর্য আর ঘ্রাণের মাদকতা বিমোহিত করছে দর্শনাথীদের।

বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটে গিয়ে দেখা যায়, বিটিআরআই এর ভবনের পুকুরের পাশে বিশাল নাগলিঙ্গম বৃক্ষটি ফল ও ফুলে ভরে উঠেছে। ফুলে-ফলে সুশোভিত হয়ে পুরো ইনস্টিটিউট এলাকাকে সকাল-বিকাল সৌরভে মুগ্ধ করছে। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত পর্যটক ও দর্শনার্থীরা চায়ের রাজধানীখ্যাত শ্রীমঙ্গলে নৈসর্গিক সৌন্দর্য দেখার পাশাপাশি বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট ক্যাম্পাসে অবস্থিত এই নাগলিঙ্গমগাছ দেখেও মুগ্ধ হচ্ছেন।

বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশ চা বোর্ডের তৎকালীন চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার আব্দুল্লাহ আল হোসেন বিটিআরআই ক্যাম্পাসের পুকুরের দক্ষিণপ্রান্তে এ গাছটির চারা রোপণ করেন। তিন দশকে এটি বিশালাকৃতি ধারণ করেছে।

অপরদিকে মির্জপুর এলাকায় শহরশ্রী গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত নৌ কর্মকর্তা দেওয়ান গউছউদ্দিন আহমদের বাড়ির আঙিনায় গিয়ে দেখা যায়, নাগলিঙ্গম গাছটি এখন ফুলে ফুলে ছেয়ে আছে। গোড়া থেকেই ফুল এসেছে গাছটির প্রায় পুরো শরীর জুড়ে। কোন কোনোটি কুড়ির পর্যায়ে ফোটার অপেক্ষায়। ফুল আর কুড়ের আড়ালে পাতাই দেখা যায় না। ইতোমধ্যে নাগলিঙ্গম দর্শনার্থীদের নজর কেড়েছে।
স্থানীয় শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান সামিয়া বলেন, ‘বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটে এসে পুকুরপাড়ে বিশাল নাগলিঙ্গম বৃক্ষের মনোরম ফল-ফুল দেখে আমার ছেলেমেয়েসহ পরিবারের সবাই মোহিত হয়েছে। এমন ফল ও ফুল এর আগে কোথাও আমাদের দেখা হয়নি। কারণ বেশিরভাগ উদ্ভিদের ফুল শাখায় ফুটলেও নাগলিঙ্গমের ফুল ফোটেছে গাছের নিচের গুঁড়ি থেকে পুরো গাছের শরীরজুড়ে।’

গণমাধ্যমকর্মী মো. এহসানুল হক জানান, ‌‘শ্রীমঙ্গলস্থ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট ও অবসরপ্রাপ্ত নৌ কর্মকর্তা দেওয়ান গউছউদ্দিন আহমদের বাড়িতে দেখলাম, বহু শাখাবিশিষ্ট নাগলিঙ্গম গাছের বড় বড় কান্ডে ফুল ও ফল ধরেছে। ফুল সাপের ফণার মতো বাঁকানো। রাতের বেলায় ফুল থেকে তীব্র সুগন্ধ বের হয়, যা সকাল পর্যন্ত থাকে। এ গাছের রয়েছে অ্যান্টিসেপটিক, অ্যান্টিবায়োটিক ও অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষধি গুণ। ফুল ও রস চর্ম এবং ম্যালেরিয়াসহ নানা রোগ প্রতিরোধে ব্যবহার করা হয়। ফুল ও ফলের নির্যাস থেকে দামি সুগন্ধি তৈরি করা হয়। ফলগুলো হাতির খুবই প্রিয় খাবার। এজন্য এর অন্য নাম হাতির জোলাপ গাছ বলা হয়।’

বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক উদ্ভিদবিজ্ঞানী ড. ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘পৃথিবীতে এ গাছ এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। নাগলিঙ্গম এক প্রকার বিশাল বৃক্ষ, যার ফুলের নাম নাগলিঙ্গম ফুল। এই গাছে ফুল ধরার পর বেলের মতো গোল গোল ফল ধরে। বিরল প্রজাতির ফুলটির সৌরভে রয়েছে গোলাপ আর পদ্মের সংমিশ্রণ। নাগলিঙ্গম গাছ ৩৫ মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। গুচ্ছ পাতাগুলো খুব লম্বা, সাধারণভাবে ৮ থেকে ৩১ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে।  বছরের প্রায় সব ঋতুতেই এই গাছের পাতা ঝরে এবং কয়েক দিনের মধ্যে আবার নতুন পাতা গজায়। দ্রুত বর্ধনশীল নাগলিঙ্গমগাছে চারা রোপণের ১২-১৪ বছর পর গাছে ফুল ধরে। গাছের কান্ড ভেদ করে বেরিয়ে আসে প্রায় ৭ ইঞ্চি দীর্ঘ অসংখ্য মঞ্জুরি। এক একটি মঞ্জুরিতে ১০-২০টি ফুল ক্রমান্বয়ে ফুটতে থাকে। মঞ্জুরির একদিকে নতুন ফুল ফোটে, অন্যদিকে পুরাতন ফুল ঝরে পড়ে। ফুলের রঙ অনেকটা লালচে কমলা বা লালচে গোলাপি হয়ে থাকে।’

এসআর

Related topic   Subject:  নাগলিঙ্গম ফুল  


LATEST NEWS
MOST READ
Also read
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000.
Phone: PABX- 41053001-06; Online: 41053014; Advertisement: 41053012.
E-mail: [email protected], news©dailyobserverbd.com, advertisement©dailyobserverbd.com, For Online Edition: mailobserverbd©gmail.com
🔝
close