রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগের ছয় শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে র্যাগিংয়ের অভিযোগ এনেছেন দুই শিক্ষার্থী। তাঁদের অভিযোগ, অভিযুক্তরা কুরুচিপূর্ণ ভাষায় গালিগালাজ করেছেন। সেই সঙ্গে অশ্লীল কবিতা আবৃত্তি ও অঙ্গভঙ্গি করতে বাধ্য করা হয়েছে।
দুই ভুক্তভোগী জানান, গত শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে তাঁদের ওপর এসব মানসিক নির্যাতন চালানো হয়। এ ঘটনায় মানসিক চাপ, লজ্জা ও নিরাপত্তাহীনতার কথা উল্লেখ করে গত রোববার প্রক্টর দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগপত্রে তারা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন।
অভিযুক্তরা হলেন, হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগের ২০২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থী মুকমিনুল ইসলাম চৌধুরী, গোলাম রাব্বী, মাহাবুব হোসেন, মেহেদী হাসান মিঠু, শাহ পরান ও শাহাদাত হোসেন।
ভুক্তভোগীরা একই বিভাগের ২০২৩-২৪ সেশনের শিক্ষার্থী। তাঁরা জানান, ঘটনার সময় অভিযুক্তদের সঙ্গে আরও ২০-২৫ জন শিক্ষার্থী ছিলেন। আর র্যাগিংয়ের শিকার হয়েছেন আরও কয়েকজন। অন্যরা ভয় ও শঙ্কার কারণে অভিযোগ জানাতে আসেননি। তবে এমন ঘটনা যেন আর না ঘটে, সেজন্য তারা সাহস করে অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগে বলা হয়, শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বিভাগের সিনিয়র কয়েকজন শিক্ষার্থী জুনিয়র কয়েকজনকে একাডেমিক ভবনের ছাদে ডেকে নেন। সেখানে প্রায় ৫০ শিক্ষার্থীর সামনে টানা পাঁচ ঘণ্টা মানসিক নির্যাতন চালানো হয়। ভুক্তভোগীদের দিয়ে কুরুচিপূর্ণ শব্দ বলানো এবং অশ্লীল কবিতা আবৃত্তি ও অশালীন অঙ্গভঙ্গি করানো হয়। এসব করতে অস্বীকৃতি জানালে মা-বাবাকে নিয়ে গালিগালাজ এবং ব্যক্তিগত ও পারিবারিক বিষয়ে হেনস্তা করা হয়। যাতে কেউ প্রমাণ রাখতে না পারে সে জন্য মোবাইল ফোন জমা রাখতে বাধ্য করা হয়। পুরো ঘটনার কারণে তাঁরা মারাত্মক মানসিক বিপর্যয়ের শিকার হয়েছেন।
জানতে চাইলে অভিযুক্ত গোলাম রাব্বী বলেন, র্যাগিংয়ের মতো কিছু হয়নি। আমাদের বিভাগ একটি টুর্নামেন্টে জয়ী হওয়ায় জুনিয়রদের নিয়ে খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন ছিল। ব্যাচের অন্যদেরও জিজ্ঞেস করতে পারেন।
আরেক অভিযুক্ত মাহাবুব হোসেন বলেন, অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা। শুধু একটি খাওয়ার আয়োজন হয়েছিল। আমাদের কাছে প্রমাণ হিসেবে ছবি ও ভিডিও আছে।
যোগাযোগ করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মাহবুবর রহমান বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। রোববার সন্ধ্যায় ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলেছি। প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি সত্য মনে হয়েছে। দ্রুত অভিযুক্ত, ভুক্তভোগীসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলব। অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনা হবে।
এফএ/আরএন