নাটোরের সিংড়ায় আত্রাই নদী দখল করে পাকা ভবন নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার লালোর ইউনিয়নের ডাকমন্ডপ বাজার এলাকার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া মরা আত্রাই নদীর জায়গা দখল করে প্রায় ২০ থেকে ২৫টি পাকা, আধা পাকা ভবন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করা হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, প্রথমত প্রভাবশালী কতিপয় ব্যক্তি নদীর জায়গা দখল করে ইটের পাকা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ করলেও প্রশাসনের কোনো নজরদারি না থাকায় এই নদীটি এখন দখলের প্রতিযোগিতায় নেমেছেন সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ। রাত-দিন চলছে নদীর ভেতরেই ইট-পাথরের পাকা পিলার নির্মাণ কাজ। সেখানে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ময়লা-আবর্জনা ও মাটি ভরাটের ফলে দেশের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে মরা আত্রাই নদীসহ এর শাখা নদীগুলো।
সরেজমিনে উপজেলার ডাকমন্ডপ বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বাজারের পাকা রাস্তার পাশ দিয়ে প্রায় অর্ধশত পাকা ও আধা পাকা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। সেই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের পেছনে জায়গা বৃদ্ধি করতেই পাকা পিলার দিয়ে আত্রাই নদী দখলের প্রতিযোগিতা চলছে। বাজারের ব্যবসায়ী তুষার প্রামাণিক, ইসলাম ফকির ও আব্দুল জলিল নদী দখল করে পিলারের উপর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ করছেন।
পাশেই নদী দখল করে বিল্ডিং নির্মাণের জন্য ব্যাস খুড়ে প্রস্তুতি নিচ্ছেন আব্দুস সাত্তার নামের স্থানীয় এক বিএনপি নেতা। শুধু নদীর জায়গাই দখল নয়, ওই বিএনপি নেতা আব্দুস সাত্তার শুরুতে ডাকমন্ডপ বাজারের শুকবর আলী প্রামাণিক নামের এক নিরীহ ব্যক্তির জায়গা দখল নিয়ে পাকা দোকান নির্মাণ করেন। এখন সেই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বৃদ্ধি করতেই নদী দখল করে পিলারের ব্যাস খুড়েছেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীর পরিবার ও বাজারের ব্যবসায়ীদের।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত বিএনপি নেতা আব্দুস সাত্তার জানান, তিনি কারো জায়গা দখল করেননি। নিজের ক্রয়কৃত জায়গায় দোকান নির্মাণ করেছেন। তবে বাজারের সবাই নদী দখল করে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান করেছেন তাই তিনিও করেছেন।
নদী দখল করে পাকা ভবন নির্মাণকারী তুষার প্রামাণিক জানান, তার জায়গা অনেক আগে নদীতে ভেঙ্গে গিয়েছিল। তিনি তার জায়গাতেই পিলার নির্মাণ করছেন। তাছাড়া সবাই তো নদীর ভেতরে পিলার করেছেন, তিনি করলে দোষের কি?
ডাকমন্ডপ বাজারের ব্যবসায়ী শুকবর আলী জানান, তিনি দেশের বাইরে থাকার সুযোগে তার নামজারিকৃত জায়গার কিছু অংশ জবর দখল করেছেন প্রতিবেশী বিএনপি নেতা আব্দুস সাত্তার। এখন আবার সেই জায়গা সংলগ্ন নদী দখল করে পাকা ভবন নির্মাণের পায়তারা করছেন ওই বিএনপি নেতা। তিনি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
সিংড়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) গোলাম রব্বানী সরদার জানান, নদীর জায়গা দখল করে পাকা ভবন ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠা নির্মাণের কোনো সুযোগ নেই। খোঁজখবর নিয়ে দ্রুতই যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন তিনি।