খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় এবার ঢেঁড়সের বাম্পার ফলন হয়েছে। উচ্চ ফলনশীল ও দেশীয় জাতের ঢেঁড়স স্থানীয় হাট-বাজারে সরবরাহের পাশাপাশি রাজধানী ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করছেন চাষিরা। মৌসুমের শুরুতে ঢেঁড়সের ভালো দাম পেয়ে চাষিরা বেশ খুশি।
ঢেঁড়স চাষ লাভজনক হওয়ায় গত এক দশকে ডুমুরিয়ায় এর আবাদ ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। পতিত জমিতেও এখন ঢেঁড়সের চাষ হচ্ছে। লাভজনক হওয়ায় অনেক চাষিই ঢেঁড়স চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
বর্তমানে পাইকারি বাজারে প্রতি মণ (৪০ কেজি) ঢেঁড়স বিক্রি হচ্ছে ১,৪০০ টাকায়, অর্থাৎ প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
জানা গেছে, ডুমুরিয়া উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে এবার ব্যাপক পরিমাণে ঢেঁড়সের আবাদ হয়েছে। দেশীয় জাতের পাশাপাশি উচ্চ ফলনশীল জাতের ঢেঁড়সও উৎপাদন করা হচ্ছে। এখানকার মাটি ঢেঁড়স চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় আবাদ দিন দিন বাড়ছে।
চাষিরা জানান, মার্চ মাস থেকে ঢেঁড়সের মৌসুম শুরু হয়। এক বিঘা জমিতে সর্বোচ্চ ২৫ থেকে ৩০ মণ ঢেঁড়স উৎপাদন হয়। পুরো মৌসুমে এক বিঘা জমি থেকে ৫০ থেকে ৭২ হাজার টাকা আয় সম্ভব। সেখানে এক বিঘা জমিতে ঢেঁড়স চাষে খরচ পড়ে প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা।
তাঁরা আরও জানান, অন্যান্য সবজির তুলনায় ঢেঁড়সে কীটপতঙ্গের আক্রমণ কম হয়। এছাড়া শ্রমিক ও সারের খরচও তুলনামূলকভাবে কম। বাড়ির নারীরাও সহজে ঢেঁড়স তুলতে পারেন, ফলে শ্রমমূল্য বাঁচে। স্থানীয় মোকামে ঢেঁড়স নিয়ে এলে ব্যাপারীরা নগদ টাকায় তা কিনে নেন, ফলে চাষিদের বিক্রি নিয়ে তেমন চিন্তা করতে হয় না।
ডুমুরিয়া উপজেলার আঠারো মাইল বাজারে রয়েছে ঢেঁড়সের সবচেয়ে বড় মোকাম। চাষিরা জানান, গত বছরও ঢেঁড়সের ভালো দাম পেয়েছিলেন। এবছরও তাঁরা ভালো দামে ঢেঁড়স বিক্রি করছেন।
ডুমুরিয়া বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, মার্চ থেকে ঢেঁড়স আসতে শুরু করেছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে ভ্যান ও বস্তা বোঝাই করে চাষিরা ঢেঁড়স নিয়ে এসে বাজারে বিক্রি করছেন।
ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ ইনসাদ ইবনে আমিন বলেন, “ঢেঁড়স একটি সম্ভাবনাময় ও লাভজনক ফসল। তাই এখানে ঢেঁড়সের আবাদ দিন দিন বাড়ছে।”
এমএইচ/আরএন