নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে গ্রেপ্তারে বাধা, পুলিশের ওপর হামলা এবং কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার (১২ মে) রাতে সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক মো. রিপন মৃধা বাদী হয়ে মামলাটি (মামলা নম্বর-৯) দায়ের করেন। মামলায় ৫২ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ২০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে এজাহারনামীয় আসামিদের নাম-পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে প্রকাশ করেনি পুলিশ।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) তারেক আল মেহেদী গণমাধ্যমকে জানান, সোমবার রাতে মামলাটি দায়ের হয়েছে এবং জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘটনায় ডা. আইভীর বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় তিনটি হত্যা ও একটি হত্যাচেষ্টা এবং ফতুল্লা থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা রয়েছে। এর মধ্যে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় দায়ের করা মিনারুল ইসলাম নামের এক পোশাক শ্রমিক হত্যা মামলায় গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে গেলে তার সমর্থকদের বাধার মুখে পড়ে।
এ সময় আইভীর বাসভবনে প্রবেশ করলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক আল মেহেদী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) হাসিনুজ্জামান, ওসি নাসির উদ্দিন আহমেদ এবং ওসি শাহিনুর আলমসহ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা রাত সাড়ে ১১টা থেকে ভোর সাড়ে ৫টা পর্যন্ত অবরুদ্ধ অবস্থায় ছিলেন।
ঘটনার সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পুলিশের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক স্লোগান দেন এবং উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেন। পরে ডা. আইভীকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ার সময় শহরের উকিলপাড়া মোড়ে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে, যাতে একাধিক পুলিশ সদস্য আহত হন। বর্তমানে তারা চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ রয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ৯ মে ভোরে নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগ এলাকার নিজ বাসভবন চুনকা কুটির থেকে ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে সকাল ১০টায় তাকে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মঈনউদ্দিন কাদিরের আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরপর তাকে গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।
এ ছাড়া সোমবার, ১২ মে দুপুরে নারায়ণগঞ্জ আদালতে ডা. আইভীর পক্ষে জামিন ও ডিভিশন চেয়ে আবেদন করেন কয়েকজন আইনজীবী। আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করলেও ডিভিশন মঞ্জুর করেন।
এসএস/আরএন