ময়মনসিংহের গৌরীপুরে সাত বছর আগে মারা যাওয়া এক পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহকের নামে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছে ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩। এ ঘটনায় এলাকায় তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
এছাড়া, একই অফিসে মাত্র ১৮০ টাকা বকেয়া বিলের কারণে কাঞ্চন মিয়া নামের এক গ্রাহকের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে পুনঃসংযোগের জন্য ৮৮৫ টাকা ফি ধার্য করা হয়েছে। অপরদিকে, মৃত দাদার বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে গৌরীপুর সাব-জোনাল অফিসে ঘুরছেন তার নাতি ফাহিম হাসান।
মাওহা ইউনিয়নের স্বল্প নহাটা গ্রামের বাসিন্দা ফাহিম হাসান জানান, তার দাদা আবদুল হেকিমের নামে একটি বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল। তিনি সাত বছর আগে মারা গেছেন। বর্তমানে ওই সংযোগটি ব্যবহার করছেন তার চাচা হামিদুর রহমান। অথচ এখনো মৃত দাদার নামেই পাঠানো হয়েছে ‘উকিল নোটিশ’।
উপজেলার সহনাটী ইউনিয়নের পল্টীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা কাঞ্চন মিয়া জানান, তিনি নিয়মিত বিল প্রদানকারী একজন গ্রাহক। ধান কাটার ব্যস্ততার কারণে গত মাসে ১৮০ টাকার বিল পরিশোধ করতে পারেননি। এরপর কোনো নোটিশ বা সময় না দিয়েই তার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। পুনঃসংযোগের জন্য এখন ৮৮৫ টাকা ফি দাবি করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, একই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন একই গ্রামের মো. রুবেল মিয়া, সুরুজ মিয়া ও মো. চান মিয়াও। এ ছাড়া ওই গ্রামের মোট ১৯ জন গ্রাহকের বিদ্যুৎ সংযোগ কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়াই বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
ময়মনসিংহ জজকোর্টের অ্যাডভোকেট এবং পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ এর আইন উপদেষ্টা পরিমল চন্দ্র সরকারের সিলমোহরযুক্ত উকিল নোটিশটি ইস্যু করা হয় গত ২৯ এপ্রিল। সেখানে উল্লেখ রয়েছে, বকেয়া ১,০৭২ টাকা ২০ মে’র মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ এর সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, “মৃত ব্যক্তির নামে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো ঠিক হয়নি। মৃত ব্যক্তি তো আর বিল পরিশোধ করতে পারবেন না। নোটিশ পাঠানোর আগে যাচাই-বাছাই করা উচিত ছিল। বিদ্যুৎ যিনি ব্যবহার করছেন বা তার ওয়ারিশদের নামে নোটিশ পাঠালেই হতো।”
তিনি আরও বলেন, “বকেয়া যদি এক টাকা হোক বা লাখ টাকা—বকেয়া থাকলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হবে। এটা নিয়ম, এতে আমাদের কিছু করার নেই।”
এসআই/আরএন