নওগাঁর পোরশায় ভাই-বোনকে হত্যার ঘটনায় পুলিশের হাতে আটক গৃহকর্মী ও রাজমিস্ত্রি নুরুন্নবী (৩৫) স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। সোমবার সকালে টাঙ্গাইল জেলার সখীপুর থানার বয়রাতৈল ইউনিয়নের বেটুয়া পশ্চিমপাড়ায় জনৈক সুরজ মিয়ার ফার্নিচারের দোকান থেকে তাকে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকাসহ আটক করে পুলিশ।
নুরুন্নবী উপজেলার বানমহন গ্রামের আইয়ুব আলীর ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে গবিরাকুড়ি কদুপনা পাড়ায় বসবাস করছিলেন। পোরশার পূর্ববাড়ি পাড়ার মৃত তোফাজ্জল হোসেন শাহ’র ছেলে ও মেয়েকে হত্যার পর তিনি পালিয়ে যান।
পরে বিকেলে ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। এসময় নুরুন্নবী দুই ভাই-বোনকে কীভাবে হত্যা করেছিলেন, তার লোমহর্ষক বর্ণনা দেন। ঘটনাস্থল থেকে একটি ছুরি, দড়ি ও আরও কিছু আলামত উদ্ধার করা হয়।
এর আগে মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে পোরশা থানা অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) শাহ আলম, সঙ্গীয় ফোর্স, জেলা ডিবি ও সখীপুর থানা পুলিশের সহায়তায় তাকে আটক করা হয় বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তারা। তারা আরও জানান, মঙ্গলবার তাকে আদালতে হাজির করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ডের আবেদন করা হবে। এছাড়া এই হত্যাকাণ্ডে আর কেউ জড়িত আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং তদন্ত চলমান রয়েছে বলে জানান পোরশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক।
উল্লেখ্য, গত ৭ এপ্রিল সোমবার পোরশা গ্রামের পূর্ববাড়ি পাড়ায় মৃত তোফাজ্জল হোসেন শাহ’র বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ বের হলে প্রতিবেশীরা জানালার কাঁচ সরিয়ে দেখতে পান ঘরের মেঝেতে উপুড় হয়ে পড়ে আছে রেজিয়া খাতুনের মরদেহ। পরে স্থানীয়রা ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলামকে জানালে তিনি থানায় খবর দেন।
খবর পেয়ে থানা পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এবং পিবিআই নওগাঁ ও সিআইডি রাজশাহীকে জানায়। রাতেই পিবিআই নওগাঁর পুলিশ পরিদর্শক তারেক আহম্মেদ এবং সিআইডি রাজশাহীর এসআই অনিমেষ তাদের টিম নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। রাত আনুমানিক পৌনে ১টার দিকে ঘরের দরজার তালা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে রেজিয়া খাতুন (৫৮) এর মরদেহ মেঝেতে উপুড় অবস্থায় এবং তার ভাই নুর মোহাম্মদ ওরফে নুর (৫৫) এর মরদেহ শয়নকক্ষে মেঝেতে ডান পাশে পড়ে থাকতে দেখা যায়।
এ ঘটনায় নিহতদের বড়ভাই ফজলে আহম্মেদ শাহ একইদিন পোরশা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
আরইউ/আরএন