বগুড়ায় সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের অনুষ্ঠানে হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে যশোরের সাংস্কৃতিক কর্মীরা। আজ শুক্রবার বিকেলে শহরের ঈদগাহ মোড়ে উদীচী সংসদ যশোরের আয়োজনে এক প্রতিবাদী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বক্তব্যের ফাঁকে ফাঁকে জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে প্রতিবাদী গান গেয়ে প্রতিবাদ জানান সাংস্কৃতিক কর্মীরা।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব গণ-অভ্যুত্থানের সমস্ত অর্জন যেন ধূলিসাৎ না হয় এবং কোনো নতুন ফ্যাসিস্ট অপশক্তির উত্থান না ঘটে, সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
তাঁরা আরও বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকেই একটি চিহ্নিত গোষ্ঠী একের পর এক ইতিহাস, ঐতিহ্য, শিল্প ও সংস্কৃতি ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। উদীচী স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে। উদীচী স্পষ্টভাবে জানাতে চায়—লাখো শহীদের রক্তে অর্জিত স্বাধীনতার চেতনাকে যারা বিশ্বাসঘাতকতা করতে চায়, সাধারণ মানুষ তাদের প্রতিরোধ করবে। এক ফ্যাসিস্ট অপশক্তির বিদায় হয়েছে, নতুন করে যেন আর কোনো ফ্যাসিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে না উঠতে পারে, সে বিষয়ে সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান বক্তারা।
উদীচী যশোর সংসদের সভাপতি অ্যাডভোকেট আমিনুর রহমান হিরু বলেন, ‘স্বাধীনতা ও সংস্কৃতির প্রতীক জাতীয় সঙ্গীতের ওপর হামলা আসলে দেশের চেতনার ওপরই আঘাত। আমরা যখন জাতীয় সঙ্গীত গাই, আমাদের গায়ের লোম কাঁটা দেয়; আর স্বাধীনতাবিরোধীদের গায়ে জ্বালা ধরে। জাতীয় পতাকাকে আজ খামচে ধরেছে শকুনেরা, তাই তারা জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তনের কথা বলে। ৭১-এর পরাজিত শক্তিরাই আজ নতুন রূপে এ দৃষ্টতা দেখাচ্ছে। দেশে বৈষম্যের কারণে গণ-অভ্যুত্থান হয়েছিল, অথচ আজও মুক্ত সংস্কৃতি চর্চার পথ রুদ্ধ করা হচ্ছে। একটি অপশক্তি নানা রূপে মাথা তুলে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। তবে তাদের মনে রাখতে হবে, এ দেশের স্বাধীনতাপ্রেমী সাংস্কৃতিক কর্মীরা তাদের রুখে দেবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ হামলার সঙ্গে জড়িত দুষ্কৃতকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।’
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন উদীচী যশোরের উপদেষ্টা মুক্তিযোদ্ধা একরাম-উদ-দ্দৌলা, খন্দকার আজিজুল হক, মুক্তিযোদ্ধা ইলাহদাদ খান, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক সানোয়ার আলম খান দুলু, সুরধনী সংগীত একাডেমির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান বুলু, এবং চাঁদের হাট যশোরের সভাপতি ফারাজী আহমেদ সাঈদ বুলবুল প্রমুখ।
এসকে/আরএন